মূল কবিতা :
উদ্ভ্রান্ত সেই আদিম যুগে
স্রষ্টা যখন নিজের প্রতি অসন্তোষে
নতুন সৃষ্টিকে বার-বার করছিলেন বিধ্বস্ত,
তাঁর সেই অধৈর্যে ঘন-ঘন মাথা-নাড়ার দিনে
রুদ্র সমুদ্রের বাহু
প্রাচী ধরিত্রীর বুকের থেকে
ছিনিয়ে নিয়ে গেল তোমাকে, আফ্রিকা,
বাঁধলে তোমাকে বনস্পতির নিবিড় পাহারায়
কৃপণ আলোর অন্তঃপুরে।
সেখানে নিভৃত অবকাশে তুমি
সংগ্রহ করছিলে দুর্গমের রহস্য,চিনছিলে জলস্থল আকাশের দুর্বোধ সংকেত,
প্রকৃতির সৃষ্টি-অতীত জাদু
মন্ত্র জাগাচ্ছিল তোমার চেতনাতীত মনে।
বিদ্রূপ করছিলে ভীষণকে
বিরূপের ছদ্মবেশে,
শঙ্কাকে চাচ্ছিলে হার মানাতে
আপনাকে উগ্র ক’রে বিভীষিকার প্রচণ্ড মহিমায়
তাণ্ডবের দুন্দুভি নিনাদে॥
হায় ছায়াবৃতা,
কালো ঘোমটার নিচে
অপরিচিত ছিল তোমার মানবরূপ
উপেক্ষার আবিল দৃষ্টিতে।
এল ওরা লোহার হাতকড়ি নিয়ে
নখ যাদের তীক্ষ্ণ তোমার নেকড়ের চেয়ে,
এল মানুষ-ধরার দল,
গর্বে যারা অন্ধ তোমার সূর্যহারা অরণ্যের চেয়ে।
সভ্যের বর্বর লোভ
নগ্ন করল আপন নির্লজ্জ অমানুষতা।
তোমার ভাষাহীন ক্রন্দনে বাষ্পাকুল অরণ্যপথে
পঙ্কিল হোলো ধূলি তোমার রক্তে অশ্রুতে মিশে;
দস্যু-পায়ের কাঁটা-মারা জুতোর তলায়
বীভৎস কাদার পিণ্ড
চিরচিহ্ন দিয়ে গেল তোমার অপমানিত ইতিহাসে॥
সমুদ্রপারে সেই মুহূর্তেই তাদের পাড়ায় পাড়ায়
মন্দিরে বাজছিল পূজার ঘণ্টা
সকালে সন্ধ্যায়, দয়াময় দেবতার নামে;
শিশুরা খেলছিল মায়ের কোলে;
কবির সংগীতে বেজে উঠছিল
সুন্দরের আরাধনা॥
আজ যখন পশ্চিম দিগন্তে
প্রদোষকাল ঝঞ্ঝাবাতাসে রুদ্ধশ্বাস,
যখন গুপ্তগহ্বর থেকে পশুরা বেরিয়ে এল,
অশুভ ধ্বনিতে ঘোষণা করল দিনের অন্তিমকাল,
এসো যুগান্তরের কবি
আসন্ন সন্ধ্যার শেষ রশ্মিপাতে
দাঁড়াও ঐ মান-হারা মানবীর দ্বারে,
বলো, ক্ষমা করো,—
হিংস্র প্রলাপের মধ্যে
সেই হোক তোমার সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী ॥
মূলগ্রন্থ: পত্রপুট
বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নোত্তর [MCQ]:
১. ‘প্রদোষকাল
ঝঞ্জাবাতাসে রুদ্ধশ্বাস’— ‘প্রদোষ’ শব্দের অর্থ
—
(ক)
সন্ধ্যা (খ)
ভোর
(গ)
রাত্রি (ঘ) দুপুর
২. “সেই
হোক তোমার সভ্যতার শেষ পূর্ণবাণী”— ‘সভ্যতার শেষ পূর্ণবাণী’—
(ক) বিদ্বেষ ত্যাগ
করো
(খ) ক্ষমা
করো
(গ)
ভালোবাস
(ঘ) মঙ্গল করো
৩. আদিম যুগে
স্রষ্টার কার প্রতি অসন্তোষ ছিল ?
(ক) দয়াময় দেবতার
প্রতি
(খ)কবির সংগীতের প্রতি
(গ)
নিজের প্রতি
(ঘ) ধরিত্রীর প্রতি
৪. ‘কবির সংগীতে
বেজে উঠেছিল’ — কী বেজে উঠেছিল ?—
(ক) সংগীতের
মূর্চ্ছনা
(খ) সুন্দরের আরাধনা
(গ) সুরের
ঝংকার
(ঘ) রাগরাগিনী
৫. ‘ছিনিয়ে নিয়ে গেল
তোমাকে’ — ‘তোমাকে’ বলতে বোঝানো হয়েছে —
(ক) ইউরোপকে
(খ) আফ্রিকাকে
(গ)
আমেরিকাকে
(ঘ) ভারতবর্ষকে
৬.’হায়
ছায়াবৃতা’ — ‘ছায়াবৃতা’ বলতে বোঝানো হয়েছে —
(ক)এশিয়া
মহাদেশকে
(খ)আফ্রিকা মহাদেশকে
(গ) সমগ্র
বিশ্বকে
(ঘ) ভারতবর্ষকে
৭. দাঁড়াও ওই মানহারা
মানবীর দ্বারে’ — মানহারা মানবী হল—
(ক) ইউরোপ (খ) আফ্রিকা
(গ) সমগ্র বিশ্ব
(ঘ) ভারতবর্ষ
৮. নিভৃত অবকাশে
আফ্রিকা চিনেছিল —
(ক) দুর্গমের
রহস্য
(খ) জলস্থল-আকাশের
দুর্বোধ সংকেত
(গ) প্রাকৃতিক
রহস্য
(ঘ) রহস্য ও দুর্বোধ সংকেত
৯. “এল মানুষ-ধরার দল” যাদের নখ ছিল—
(ক) শেয়ালের চেয়ে তীক্ষ্ণ
(খ) নেকড়ের চেয়ে তীক্ষ্ণ
(গ) হায়নার চেয়ে তীক্ষ্ণ
(ঘ) সিংহের চেয়ে ধারালাে
১০. ‘ছিনিয়ে নিয়ে গেল তােমাকে’-কে ছিনিয়ে নিয়ে গেল?
(ক) প্রাচী ধরিত্রী (খ) বনস্পতি
(গ) প্রকৃতির দৃষ্টি (ঘ) রুদ্র সমুদ্রের বাহু
১১. ‘শিশুরা খেলছিল’—
(ক) মাঠে মাঠে
(খ) বাষ্পকুল অরণ্যপথে
(গ) মায়ের কোলে
(ঘ) মন্দির
১২. ‘আফ্রিকা’ কবিতাটি যে কাব্যগ্রন্থ থেকে গৃহীত–
(ক) মানসী (খ) চিত্রা
(গ) গীতাঞ্জলি (ঘ) পত্রপুট
১৩. “মন্দিরে বাজছিল পূজোর ঘন্টা”– কার নামে?
(ক) সভ্য দেশগুলির নামে
(খ) আফ্রিকার রাজার নামে
(গ) ঔপনিবেশিক শাসকের নামে
(ঘ) দয়াময় দেবতার নামে
১৪. নিভৃত অবকাশে আফ্রিকা সংগ্রহ করছিল-
(ক) ভাষাহীন ক্রন্দন
(খ) দুর্বোধ সংকেত
(গ) নির্লজ্জ অমানুষতা
(ঘ) দুর্গমের রহস্য
১৫. “এল ওরা লোহার হাতকড়ি নিয়ে” – ওরা হল-
(ক) ভারতীয়
(খ) ইউরোপীয়
(গ) আমেরিকান
(ঘ) আফ্রিকান
অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর :
১। “ছিনিয়ে নিয়ে গেল তোমাকে”- কে, কাকে ছিনিয়ে নিয়ে গেল ?
উত্তর: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘আফ্রিকা’ কবিতায় রুদ্র সমুদ্রের বাহু অর্থাৎ উত্তাল সমুদ্র পৃথিবীর পূর্বভাগ থেকে আফ্রিকাকে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিল ।
২। “হায় ছায়াবৃতা”- আফ্রিকাকে ছায়াবৃতা বলার কারণ কী ?
উত্তর: মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আফ্রিকা পৃথিবীর জ্ঞানালোক থেকে বিছিন্ন হয় অন্যদিকে দুর্গম ও আদিম জঙ্গলাকীর্ণ প্রকৃতি তাকে ছায়াবৃতা করে রাখে।
৩। “কবির সংগীতে বেজে উঠেছিল” – কী বেজে উঠেছিল?
উত্তর: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘আফ্রিকা’ কবিতায় কবির সংগীতে বেজে উঠেছিল সুন্দরের আরাধনা।
৪। “এসো যুগান্তের কবি” – কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘যুগান্তের কবি’র কাছে কোন্ আহ্বান জানিয়েছেন ?
উত্তর: কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘আফ্রিকা’ কবিতায় যুগান্তের কবির কাছে মানহারা মানবী তথা আফ্রিকার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে সকলের হয়ে ক্ষমাপ্রার্থনার আহ্বান জানিয়েছেন।
৫। “বিদ্রূপ করছিলে ভীষণকে” – কীভাবে ‘বিদ্রূপ’ করেছিল ?
উত্তর: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘আফ্রিকা’ কবিতায় আফ্রিকা মহাদেশ রহস্যময়তায় ভর করে ভয়াবহ ভীষণকেই যেন বিদ্রুপ করেছিল ?
৬। “শঙ্কাকে চাচ্ছিলে হার মানাতে”- কে, কীভাবে শঙ্কাকে হার মানাতে চেয়েছিল ?
উত্তর: দুর্গম দুর্ভেদ্য ছায়াবৃতা আফ্রিকা নিজেকে উগ্র করে বিভীষিকার প্রচণ্ড মহিমায়, বিধ্বংসী তাণ্ডবলীলার প্রচন্ড শব্দে শঙ্কাকে হার মানাতে চেয়েছিল।
৭। “… অপরিচিত ছিল তোমার মানবরূপ/ উপেক্ষার আবিল দৃষ্টিতে।”- কার মানবরূপ, কাদের কাছে উপেক্ষার আবিল দৃষ্টিতে অপরিচিত ছিল ?
উত্তর: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘আফ্রিকা’ কবিতার প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে আফ্রিকা মহাদেশের মানবরূপ সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর কাছে উপেক্ষার আবিল দৃষ্টিতে যেন অরণ্যে ঢাকা কালো ঘোমটার নীচে অপরিচিত ছিল।
৮। “চিরচিহ্ন দিয়ে গেল তোমার অপমানিত ইতিহাসে”- চিরচিহ্ন বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: আফ্রিকা কবিতায় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাম্রাজ্যবাদী ও ঔপনিবেশিক অত্যাচারে যুগ যুগ ধরে ক্ষতবিক্ষত আফ্রিকার কলঙ্কিত ইতিহাসকে ‘চিরচিহ্ন’ বলতে চেয়েছেন।
৯। “নখ যাদের তীক্ষ্ণ তোমার নেকড়ের চেয়ে”- এর দ্বারা কবি কী বুঝিয়েছেন ?
উত্তর : ‘আফ্রিকা’ কবিতায় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আফ্রিকার মানুষদের উপর সাম্রাজ্যবাদী শাসকের বর্বর ও পাশবিক অত্যাচারের ভয়াবহতার কথা বলতে গিয়ে তাদের বন্য নেকড়ের চেয়েও নিষ্ঠুর অহিংস বলে অভিহিত করেছেন।
১০। “বলো ক্ষমা করো” – কীসের জন্য এই ক্ষমাপ্রার্থনা ?
উত্তর: ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদীর দল যুগ যুগ ধরে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য আফ্রিকার সংস্কৃতি ও জনগোষ্ঠীর ওপর পাশবিক শোষণ চালিয়েছে । তার জন্য মানব সভ্যতার প্রতিনিধি হয়ে যুগান্তের কবির এই ক্ষমাপ্রার্থনা।
১১। “এল ওরা লোহার হাতকড়ি নিয়ে”– ওরা কারা ?
উত্তর: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আফ্রিকা’ কবিতায় ‘ওরা’ বলতে সভ্যতার গর্বে গরিমাময় অত্যাচারী ইউরোপীয় ঔপনিবেশিকদের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।
সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর :
১। “এসো যুগান্তরের কবি”–‘যুগান্তের কবি’কে কেন আহ্বান করা হয়েছে?
উত্তর: দীর্ঘদিন অন্তরালে থাকা মানহারা মানবী আফ্রিকা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসী মনোভাবে অপমানিতা। মানবতার এই অপমান শুধু আফ্রিকার নয়, এই অপমান সমস্ত শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের । সভ্য দুনিয়ার বর্বরোচিত আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতি আক্রমণ নয় , মানবতার পূজারি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যুগান্তের কবির কাছে আহ্বান জানিয়েছেন আবির্ভূত হয়ে ক্ষমা প্রদান করতে। তিনি মানবতার পুণ্যবাণী দ্বারা সকলকে উদ্বুদ্ধ করবেন এই বিশ্বাস থেকেই কবি তাঁকে আহ্বান জানিয়েছেন।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর: মানর-৫
১ “হায় ছায়াবৃতা” — ‘ছায়াবৃতা’ বলার কারণ কী ? তার সম্পর্কে কবি কী বলেছেন সংক্ষেপে লেখো । [মাধ্যমিক-২০১৭]
উত্তর: মানবতার পূজারী বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘পত্রপুট’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘আফ্রিকা’ কবিতার প্রশ্নপত্রে উদ্ধৃত অংশে বনস্পতি পরিবেষ্টিত আফ্রিকা মহাদেশে দীর্ঘদিন সূর্যের আলো ও সভ্যতার আলো প্রবেশ না করায় তাকে ‘ছায়াবৃতা’ বলা হয়েছে ।
‘আফ্রিকা’ কবিতায় কবিগুরু আফ্রিকার জন্মলগ্ন থেকে তার বিবর্তনের কথা ও সর্বশেষে ঔপনিবেশিক শক্তির হাতে তার বন্দিনী হওয়ার করুন আখ্যান বর্ণনা করেছেন । জন্মমুহূর্তে আফ্রিকা প্রাচী ধরিত্রীর অখন্ড অংশের সাথে যুক্ত ছিল । কিন্তু সমুদ্রের উত্তাল জলস্রোতে সে মাতৃহারা হল, আশ্রয় নিল অরণ্যের বন্ধনে, যেখানে সূর্যরশ্মিরও প্রবেশ নিষেধ । এই ঘন অরণ্যবেষ্টিত আফ্রিকা ক্রমশ ভীষণ থেকে ভীষণতর হয়ে উঠছিল, চিনছিল জলস্থলের দুর্বোধ সংকেত । কবির কথায় —
“বিদ্রুপ করেছিলে ভীষণকে
বিরূপের ছদ্মবেশে”
আফ্রিকার এই স্বাধীন সফর, নিজেকে চিনতে শেখার সফর অল্প কিছু দিনের মধ্যেই সমাপ্ত হয়ে গেল । তার কোমল কায়ায় থাবা বসলো মানুষ— নেকড়ের দল যারা নিজেদের পাশ্চাত্যের শিক্ষিত সম্প্রদায় বলেই পরিচয় দিয়ে থাকেন । ঔপনিবেশিক শক্তির আক্রমণে আফ্রিকার কুমারীত্ব গেল ঘুচে । তার বনজ ও মানবিক সম্পদ দখল করে নিল ‘মানুষ ধরার দল’ কালিমালিপ্ত হল ইতিহাস, অপমানিত আফ্রিকার অশ্রুজলে । আফ্রিকার অবগুণ্ঠিত ক্রন্দনে —
“বাষ্পাকুল হল অরণ্যপথে,
পঙ্কিল হলো ধুলি তোমার রক্তে অশ্রুতে মিশে”
ছায়াবৃতা আফ্রিকার কালো ঘোমটার নীচে লুক্কায়িত মানবী রূপ প্রকাশিত হল বিশ্বের কাছে, কিন্তু সে যে যন্ত্রণাদায়ক প্রকাশ । কবি একথা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছিলেন । তাই তিনি ‘যুগান্তের কবি’ কে আহ্বান করেছেন এবং বিশ্বমানবতাকে বলেছেন এই ‘মানহারা মানবী’র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে । কবির কথায়, এই ক্ষমাভিক্ষাই হয়ে উঠুক ‘সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী’ ।
২. “চিরচিহ্ন দিয়ে গেল তোমার অপমানিত ইতিহাসে ।” — ‘তোমার’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে ? তার ‘অপমানিত ইতিহাসে’র সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও । [মাধ্যমিক-২০১৯]
উঃ- মানবতার পূজারী বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আফ্রিকা’ কবিতার অন্তর্গত উদ্ধৃত অংশটিতে ‘তোমার’ বলতে আফ্রিকার কথা বলা হয়েছে ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘আফ্রিকা’ কবিতায় আফ্রিকার ওপর সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের অত্যাচার ও শোষণ-বঞ্চনার কাহিনিকে বর্ণনা করেছেন । প্রাকৃতিকভাবে দুর্গম আফ্রিকা দীর্ঘসময় ইউরোপীয় শক্তিগুলির নজরের বাইরে ছিল । কিন্তু উনিশ শতকে ইউরোপীয়রা আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপন শুরু করে । এই শতকের শেষে প্রায় পুরো আফ্রিকা ইউরোপের বিভিন্ন দেশের উপনিবেশে পরিণত হয় । এইসব তথাকথিত সভ্য রাষ্ট্রশক্তি আফ্রিকার মানুষদের ওপর নির্মম অত্যাচার চালাত । তাদের নির্লজ্জ লোভ যেন বর্বরতার রূপ ধরে আত্মপ্রকাশ করেছিল । ক্ষতবিক্ষত হয়েছিল আফ্রিকার মানুষ । তাদের রক্ত আর চোখের জলে কর্দমাক্ত হয়েছিল আফ্রিকার মাটি । সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রনায়কদের কাঁটা-মারা জুতোর নীচে বীভৎস কাদার পিণ্ড যেন চিরকালের মতো অত্যাচারের চিহ্ন রেখে গিয়েছিল আফ্রিকার অপমানিত ইতিহাসে ।
আপনার কোনো বই(পেপারব্যাক এডিশন) আছে নাকি?
খুব সুন্দর
বর্তমানে, আমাদের কোন বই নেই. ভবিষ্যতে হতে পারে
Srotha নিজের প্রতি অস্তুষ্ট ছিলেন কেনো ? উত্তর টা বলবেন প্লজ
আপনার লেখা গুলো খুব ভালো।