ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর | Iswarchandra Vidyasagar| কবিতা | মাইকেল মধুসূদন দত্ত| একাদশ শ্রেণি | XI | প্রথম সেমেস্টার | BanglaSahayak

 


  ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর

           মাইকেল মধুসূদন দত্ত


বিদ্যার সাগর তুমি বিখ্যাত ভারতে।

করুণার সিন্ধু তুমি, সেই জানে মনে,

দীন যে, দীনের বন্ধু !– উজ্জ্বল জগতে

হেমাদ্রির হেম-কান্তি অম্লান কিরণে।

কিন্তু ভাগ্য-বলে পেয়ে সে মহা পর্বতে,

যে জন আশ্রয় লয় সুবর্ণ চরণে,

সেই জানে কত গুণ ধরে কত মতে

গিরীশ। কি সেবা তার সে সুখ সদনে !

দানে বারি নদীরূপ বিমলা কিঙ্করী।

যোগায় অমৃত ফল পরম আদরে

দীর্ঘ-শিরঃ তরু-দল, দাসরূপ ধরি।

পরিমলে ফুল-কুল দশ দিশ ভরে,

দিবসে শীতলশ্বাসী ছায়া, বনেশ্বরী,

নিশায় সুশান্ত নিদ্রা, ক্লান্তি দূর করে।



মূলগ্রন্থ :

 ‘চতুর্দশপদী কবিতাবলী’। গ্রন্থটি ১৮৬৬ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। আলোচ্য সনেটটি ‘চতুর্দশপদী কবিতাবলী’র ৮৬ তম সনেট।


কবিতার বিষয়বস্তু :

মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর  ‘ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর’  কবিতায় বিদ্যাসাগরের প্রতি অসীম শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন। আলোচ্য সনেট বা চতুর্দশপদী কবিতাটিতে মাইকেল মধুসূদন দত্ত বিদ্যাসাগরকে হিমালয় পর্বতের সঙ্গে তুলনা করেছেন। এই সনেটটি মধুকবি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে সম্বোধন করে লিখেছেন।


ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে মধুকবি বলছেন সারা ভারতে তুমি বিদ্যার সাগর নামে  বিখ্যাত। কিন্তু যে গরীব, এবং যে বিদ্যাসাগরের দয়াগুণের পরিচয় লাভ করেছে, সেই জানে, তিনি দয়ার‌ও সমুদ্র। অম্লান সূর্য কিরণে হিমালয় পর্বতের সোনার মতো রূপ জগতে উজ্জ্বল। কিন্তু ভাগ্যগুণে যে ব্যক্তি সেই মহা-পর্বতকে পায় এবং তার সোনার চরণে আশ্রয় নেয়, সে-ই জানে হিমালয় কত গুণের অধিকারী। তার গৃহে কত সেবার আয়োজন। 


এই কবিতার ষটকে কবি হিমালয় পর্বতের গুণাবলির মধ্য দিয়ে বিদ্যাসাগরের গুণগান করেছেন। তিনি বলেছেন: বিমলা অর্থাৎ সুন্দরী নদী দাসী রূপে জল দেয়। দীর্ঘ-শিরঃ তরুদল অর্থাৎ  উচ্চ বৃক্ষরাজি দাস রূপ ধরে অমৃতের মতো সুস্বাদু ফল দান করে। ফুলেরা সুগন্ধে দশদিক ভরিয়ে তোলে। দিনের বেলায় শীতল শ্বাসী ছায়া দেয়। বনেশ্বরী অর্থাৎ বৃহৎ বৃক্ষ রাত্রিবেলা শান্তির নিদ্রা ক্লান্তি দূর করে।


বহুবিকল্প প্রশ্নাবলি(MCQ) :



১. ‘ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর’ কবিতাটির মূলগ্রন্থের নাম কী ?

A) তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য

B) মেঘনাদবধ কাব্য 

C) চতুর্দশপদী কবিতাবলী

D) ব্রজঙ্গনা কাব্য

উত্তর : C) চতুর্দশপদী কবিতাবলী


২. ‘ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর’ কবিতাটি কোন ধরনের কবিতা ?

A) গীতিকবিতা

B) সনেট

C) গান

D) ছড়া

উত্তর : B) সনেট


৩. ‘ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর’ কবিতাটি ‘চতুর্দশপদী কবিতাবলী’র কততম সনেট ?

A) ৮০ তম

B) ৮২ তম

C) ৮৪ তম

D) ৮৬ তম

উত্তর : D) ৮৬ তম


৪. “বিদ্যার সাগর তুমি বিখ্যাত  ______।” – শূন্যস্থানে বসবে 

A) বিশ্বে

B) জগতে

C) ভারতে

D) ভূ-ভারতে

উত্তর : C) ভারতে


৫. “করুণার সিন্ধু তুমি” – ‘করুণার সিন্ধু’ হলো- 

A) হিমালয়

B) মধুসূদন

C) বিদ্যাসাগর

D) দেবতা

উত্তর : C) বিদ্যাসাগর


৬.  ‘দীনের বন্ধু’ বলে কাকে সম্বোধন করা হয়েছে ?

A) হিমালয়

B) মধুসূদন

C) দেবতা

D) বিদ্যাসাগর

উত্তর : D) বিদ্যাসাগর


৭. “হেমাদ্রির হেম-কান্তি ________ কিরণে।” – শূন্যস্থানে বসবে 

A) উজ্জ্বল 

B) অম্লান

C) প্রভাত

D) সুবর্ণ 

উত্তর : B) অম্লান


৮.  “যে জন আশ্রয় লয় ______ চরণে” – শূন্যস্থানে বসবে 

A) সোনার  

B) স্বর্ণাভ

C) অমৃত

D) সুবর্ণ 

উত্তর : D) সুবর্ণ


৯. বিদ্যাসাগরকে তুলনা করা হয়েছে যার সঙ্গে 

A) হিমালয় 

B) দেবতা 

C) মহান মানুষ

D) পর্বত

উত্তর : A) হিমালয়


১০. “সেই জানে কত গুণ ধরে কত মতে

/গিরীশ।” – ‘গিরীশ’ শব্দের অর্থ  কী ?

A) হিমালয় 

B) দেবতা 

C) শিব

D) পর্বত

উত্তর : A) হিমালয়


১১. ‘ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর’  সনেটে  ‘বিমলা কিঙ্করী’ কাকে বলা হয়েছে

A) হিমালয় 

B) সিন্ধু 

C) নদী

D) পর্বত

উত্তর : C) নদী


১২. “দানে বারি নদীরূপ _____ কিঙ্করী।” – শূন্যস্থানে বসবে 

A) পরমা

B) বিমলা

C) সুন্দরী 

D) পরিমল

উত্তর : B) বিমলা


১৩. “যোগায় অমৃত ফল পরম আদরে” – কে ‘অমৃত ফল’ যোগায় ?

A) বনস্পতি

B) বনেশ্বরী

C) দীর্ঘ-শিরঃ তরু-দল

D) বনবিটপী

উত্তর : C) দীর্ঘ-শিরঃ তরু-দল


১৪. “নিশায় সুশান্ত নিদ্রা, ক্লান্তি দূর করে।” – এখানে কার কথা বলা হয়েছে ?

A) বনস্পতি

B) বনেশ্বরী

C) দীর্ঘ-শিরঃ তরু-দল

D) বনবিটপী

উত্তর : B) বনেশ্বরী


১৫.  “______ শীতলশ্বাসী ছায়া, বনেশ্বরী,” -শূন্যস্থানে বসবে 

A) দিবসে

B) নিশায়

C) সন্ধ্যায় 

D) প্রভাতে

উত্তর : A) দিবসে


নিজেরা উত্তর করো : 


১৬. ‘ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর’ কবিতাটির প্রথম আটটি পঙ্ক্তির অন্ত্যমিল- বিন্যাস হল

ক) কখ কখ কখ কখ          

খ) কখখ ককখ খক

গ) কখগ কখগ কক       

ঘ) ককখ খকক খখ


১৭. স্তম্ভ মেলাও : 

ক-স্তম্ভ                               খ-স্তম্ভ

(i) নদীরূপে জল দান করে     (a) সুশান্ত নিদ্রা

(ঘ) দিনে শীতল ছায়া দেয়      (b) দীর্ঘ-শিরঃ তরু-দল

(iii) রাতে ক্লান্তি দূর করে       (c) বিমলা কিঙ্করী

(iv) পরম আদরে অমৃত ফল জোগায়    (d) বনেশ্বরী


ক) (i)-(a), (ii)-(b), (iii) – (d), (iv) – (c)

খ) (i)-(d), (ii)-(b), (iii) – (a), (iv) – (c)

গ) (i)-(c), (ii)-(d), (iii) – (a), (iv) – (b)

ঘ) (i)-(a), (ii)-(b), (iii) – (c), (iv) – (d)


১৮. ক্রম অনুযায়ী বাক্যের পুণর্বিন্যাস করো:

(i) কি সেবা তার সে সুখ-সদনে।

(ii) পরিমলে ফুল-কুল দশ দিশ ভরে;

(iii) দানে বারি নদীরূপ বিমলা কিঙ্করী;

(iv) নিশায় সুশান্ত নিদ্রা, ক্লান্তি দূর করে।


(ক) (iii), (i), (iv), (ii)

(খ) (i), (iii), (ii), (iv)

(গ) (1). (iii), (ii), (iv)

(ঘ) (i), (iv), (iii), (ii)


১৯. ‘ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর’ কবিতাটি লেখা

(ক) মুক্তক ছন্দে

(খ) অমিত্রাক্ষর ছন্দে

(গ) ত্রিপদী ছন্দে

(ঘ) পাদাকুলক ছন্দে


২০.  “করুণার সিন্ধু তুমি, সেই জানে মনে,”-কে জানে?

ক) যে দীন

খ) যে দুঃখী      

গ) যে বিপন্ন      

ঘ) যে দীনের বন্ধু



Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top