প্রশ্ন : “আপনার আসল উদ্দেশ্য আপনি নিশ্চয় বিস্মৃত হবেন না।”-আসল উদ্দেশ্য কী? সেই উদ্দেশ্য সাধনে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কী করলেন? ২+৩=৫
উত্তরঃ প্রশ্নোদ্ধৃত অংশটি বিশিষ্ট সাহিত্যিক প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোচ্য গল্পে গল্পকথকের আসল উদ্দেশ্য ছিল মৎস্যশিকার। পৃথিবীর সরলতম মাছেদের বঁড়শিবিদ্ধ করবার উদ্দেশ্যেই উদ্দিষ্ট ব্যক্তির তেলেনাপোতায় আগমন।
তেলেনাপোতার ভগ্ন অট্টালিকায় রাত্রিযাপনের পর ‘ষোড়শোপাচার আয়োজন’ নিয়ে গল্পকথক শ্যাওলা-ঢাকা ভাঙা ঘাটের একপাশে বসে পড়ে। তারপর ‘যথোচিত নৈবেদ্য’ সমেত বঁড়শি জলে নামিয়ে দেয়। তারপর অধীর আগ্রহে সে মাছেদের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।
বেলা ক্রমশ বাড়তে থাকে কিন্তু উদ্দিষ্ট ব্যক্তি মাছ ধরতে সক্ষম হয় না । তার অবস্থা দেখে যেন মাছরাঙা পাখিও তাকে বিদ্রুপ করতে শুরু করে। একজোড়া ফড়িংয়ের পাল্লা দিয়ে ফাতনার ওপর বসার চেষ্টায় কথকের মনোযোগ নষ্ট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘুঘুর ডাক তাঁকে আনমনা করে তোলে। ঠিক সেই সময় নিথর জলে ঢেউয়ের শব্দে কথক দেখেন একটি মেয়ে পিতলের কলশিতে পুকুর থেকে জল ভরছে। কলশি নিয়ে চলে যেতে যেতে মেয়েটি হঠাৎ বলে – “বসে আছেন কেন? টান দিন।” অথচ আকস্মিক এই চমকে কথক ছিপে টান দিতে ভুলে যান। পরে ছিপ তুলে দেখেন বঁড়শিতে টোপ নেই। শেষ পর্যন্ত হতাশ হয়ে সাজসরঞ্জাম নিয়ে কথক উঠে পড়েন। মৎস্যশিকারের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য কথক এমন কাজই করেছিলেন।