প্রতিকারমূলক শিক্ষণ | Remedial Teaching


সংশোধনমূলক শিক্ষণ/ প্রতিকারমূলক শিক্ষণ 

Remedial Teaching

সাধারণভাবে বিদ্যালয়ে পিছিয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের আলাদাভাবে সাহায্য করাকে সংশোধনী পাঠ বা সংশোধনমূলক শিখন বলে। যেকোনো বিদ্যালয়ের যেকোনো শ্রেণিতে এমন কিছু শিক্ষার্থী থাকে যারা সেই শ্রেণির গড়মানের চেয়ে পিছিয়ে থাকে। 


কোনো শিক্ষার্থীর নির্দিষ্ট বিষয়ে শিখন সমস্যা চিহ্নিত করার জন্য পৃথক প্রচেষ্টাকে সংশোধনমূলক বা প্রতিকারমূলক শিক্ষণ বলে। একজন চিকিৎসক যেমন কোনো রোগীর রোগ নির্ধারণ করার পর তা নিরাময় করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ঔষধ বা পরামর্শদান করেন ঠিক সেই রকম একজন শিক্ষক শিক্ষা বিষয়ে সমস্যা থাকা শিক্ষার্থীকে তার সমস্যার সমাধান করার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।


যাদের জন্য প্রতিকারমূলক শিখন প্রয়োজন :

১.  ধীরগতির শিক্ষার্থী

২.  যারা দীর্ঘ সময় মনোযোগ দিতে পারেনা 

৩. শিখনে একাগ্রতার অভাব 

৪. কার্যকরভাবে তথ্য বুঝতে ব্যর্থ

৫. সময়মতো কাজ শেষ করতে পারে না

৬. নিম্ন স্মৃতিশক্তিসম্পন্ন


সংশোধনমূলক শিক্ষণে শিক্ষকের ভূমিকা  :


১. শিক্ষার্থীর বিবিধ  প্রয়োজনীয়তা মাথায়  রেখে পাঠ্য পরিকল্পনাটি প্রস্তুত করতে হবে।

২. শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে সাধারণ আগ্রহ অর্জনে সহায়তা করার জন্য বাস্তব পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে। 

৩. শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ক্রিয়াকলাপ এবং খেলায় অংশগ্রহণে উৎসাহিত করতে হবে।

৪. শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনা বাড়ানোর জন্য বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে কী শিখবে তা জানাতে উৎসাহিত করবেন।

৫. শিক্ষার্থীদের শেখার আগ্রহকে অনুপ্রাণিত করতে এবং উৎসাহিত করতে পুরস্কার প্রদানের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

৬. প্রয়োজনে শিক্ষক তাঁর শিক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটাবেন এবং শিক্ষা সহায়ক উপকরণের ব্যবহারে আরও যত্নবান হবেন।

৭.  শিক্ষার্থীরা কেন পিছিয়ে পড়ছে তার কারণ অনুসন্ধান এবং বিমূর্ত ধারণাগুলো যাতে তাদের কাছে আরও স্পষ্ট হয় সে ব্যাপারে শিক্ষক সজাগ থাকবেন। 

৮. শিক্ষককে যেহেতু মানুষ গড়ার  কারিগর হিসাবে ধরা হয় তাই একজন দক্ষ শিল্পীর মতো তিনি অতি ধৈর্য, স্নেহ,  ভালোবাসা নিয়ে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর উন্নতি ঘটাতে দায়বদ্ধ। 

৯. শিক্ষার্থীরা যাতে কোনোরূপ হীনম্মন্যতার শিকার না হয় তার জন্য  প্রতিটি পদক্ষেপে শিক্ষককে ভীষণভাবে সচেতন থাকতে হবে।


প্রশ্নোত্তর : 

১. সংশোধনমূলক  শিক্ষনের মূল উদ্দেশ্য 

ক) শিক্ষার্থীর মেধার উন্মেষ ঘটানো

খ) পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের আলাদাভাবে সাহায্য করা

গ) পাঠ্যসূচির বাইরে অন্য বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া

ঘ) শিক্ষার্থীর আচরণগত সমস্যার সমাধান করা


২. পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থী চিহ্নিত হয়

ক) শ্রেণিকক্ষে পর্যবেক্ষণের পর

খ) শিক্ষার্থীর অস্বাভাবিক আচরণের প্রেক্ষিতে 

গ) বারবার শিক্ষার্থীর প্রশ্ন করার প্রবনতা দেখে

ঘ) পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে


৩. পরীক্ষায় দেখা গেল বেশ কিছু শিক্ষার্থী ব্যাকরণে কম নম্বর পেয়েছে। এইসব শিক্ষার্থীর জন্য যা করা উচিত, তা হল 

ক) কোচিং ক্লাসের ব্যবস্থা করা 

খ) প্রাইভেট টিউটরের ব্যবস্থা করা

গ) সংশোধনমূলক শিক্ষণের ব্যবস্থা করা 

ঘ) ব্যাকরণ বিষয়ে বেশি মনোযোগ দেওয়ার কথা বলা


৪. যাদের জন্য সংশোধনমূলক শিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে তারা হল 

ক) শ্রেণিকক্ষে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থী

খ) বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী

গ) শ্রেণিকক্ষের গড় মানের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকা শিক্ষার্থী 

ঘ) ক ও গ উভয়ই 


৫. সংশোধনমূলক শিক্ষণের ক্ষেত্রে একজন শিক্ষকের 

ক) বিষয়ের উপর অনেক বেশি দখল থাকা প্রয়োজন

খ) বিষয়ের দখল ছাড়াও মনস্তাত্ত্বিক জ্ঞানের প্রয়োজন 

গ) শিক্ষকের কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন থাকা প্রয়োজন 

ঘ) শিক্ষার্থীর প্রতি প্রগাঢ়  মমতা থাকা প্রয়োজন


৬. যাদের জন্য প্রতিকারমূলক শিখন প্রয়োজন 

ক) ধীরগতির শিক্ষার্থী

খ) যারা দীর্ঘ সময় মনোযোগ দিতে পারেনা 

গ) শিখনে একাগ্রতার অভাব 

ঘ) উপরের সবগুলি


৭. নীচের কোনটি প্রতিকারমূলক শিক্ষার কাজ ?

ক) শিক্ষার্থীদের বাধার বা অসুবিধার কারণ খুঁজে বের করা 

খ) শিক্ষার্থীদের দুর্বল ও শক্তিশালী দিকগুলি সম্বন্ধে  নিশ্চিত হওয়া 

গ) বিভিন্ন আদর্শায়িত পরীক্ষার মাধ্যমে দুর্বল দিকগুলিকে খুঁজে বের করা

ঘ) উপরের সবগুলি


৮. সংশোধনমূলক শিক্ষণ এর ব্যাপারে শিক্ষককে কোন দিকে খেয়াল রাখতে হবে? 

ক) কম নম্বর পাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীরা যেন অন্যের দ্বারা উৎসাহিত না হয়

খ) বাবা মা যেন অবহেলা না করেন 

গ) কম নম্বর পাওয়ার জন্য শিক্ষক আঘাত দিয়ে কথা বলবেন না

ঘ) শিক্ষার্থীর পুষ্টি চাহিদা যেন ঠিকমতো পূরণ হয়।


উত্তরমালা : 

১.খ)     ২.ঘ)       ৩.গ)       ৪.ঘ) 

৫.খ)     ৬.ঘ)       ৭. ঘ)       ৮.গ)






0 thoughts on “প্রতিকারমূলক শিক্ষণ | Remedial Teaching”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top