প্রশ্ন : বাংলা কাব্যে মধুসূদন দত্তের অবদান আলোচনা করো। ৫
উত্তর : উনবিংশ শতাব্দীর নবজাগৃতির মহাকবি মাইকেল মধুসুদন দত্ত। ইংরেজি ভাষায় মহাকবি হওয়ার লক্ষ্যে তিনি রচনা করেন ‘The Captive Ladie’ এবং ‘Visions of the past’. কিন্তু আশানুরূপ সারা না পাওয়ায় বাংলা আখ্যানকাব্য ও মহাকাব্যে মধুসূদনের আবির্ভাব এক বিস্ময়কর ঘটনা।
কাব্যসম্ভার :
তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য :
মধুসূদন দত্তের প্রথম কাব্য ‘তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য। অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত কাব্যটি ১৮৬০ সালে প্রকাশিত হয়।
মেঘনাদবধ কাব্য :
মধুসূদন দত্তের শ্রেষ্ঠ কীর্তি ‘মেঘনাদবধ কাব্য’। নয়টি সর্গে বিভক্ত কাব্যটি প্রকাশিত হয় ১৮৬১ সালে। এটি আলংকারিক বা সাহিত্যিক মহাকাব্য। এই কাব্যের কাহিনি গ্রহণ করেছেন রামায়ণ থেকে। এই কাব্যে রামায়ণের কাহিনি ও চরিত্রগুলিকে কবি নিজস্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী পরিবর্তন করেছেন। কাব্যটি সম্পর্কে বঙ্কিমচন্দ্র বলেছেন – “The most valuable work in modern bengali literature.”
ব্রজঙ্গনা কাব্য :
মধুসূদন দত্তের স্তোত্র (ode) জাতীয় কাব্য হলো ব্রজঙ্গনা কাব্য।
বীরাঙ্গনা কাব্য :
রোমান কবি ওভিদের Heroides অবলম্বনে রচনা করেন বীরাঙ্গনা কাব্য। এটি একটি পত্রকাব্য।
চতুর্দশপদী কবিতাবলী :
‘চতুর্দশপদী কবিতাবলী’ বাংলায় প্রথম সনেট জাতীয় রচনা। এই কাব্যে ১০৬ টি সনেট রয়েছে।
আখ্যানকাব্য, মহাকাব্যের পাশাপাশি মধুসূদন দত্ত ‘আত্মবিলাপ’, ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ প্রভৃতির মতো গীতিকবিতাও রচনা করেন।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা কাব্য কবিতাকে বিরাট বিশ্বের পরিসরে মুক্তি দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন :
বাংলা গদ্যের বিকাশে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান
বাংলা গদ্যের বিকাশে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের ভূমিকা