প্রশ্ন : বাংলা গদ্যের বিকাশে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের অবদান আলোচনা করো ? ৫
ভূমিকা :
১৮০০ খ্রিস্টাব্দে কোলকাতার লালবাজার অঞ্চলে ওয়েলেসলি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ স্থাপন করেন। বাংলা গদ্য চর্চা ও বিকাশের ক্ষেত্রে এই কলেজের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
উদ্দেশ্য :
ইংল্যান্ড থেকে আগত ইংরেজ রাজকর্মচারীদের দেশীয় ভাষা শিক্ষাদান।
লেখকবৃন্দ:
বাংলা সাহিত্যে ধারাবাহিক গদ্যরচনার সূত্রপাত ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ গোষ্ঠীর লেখকদের মাধ্যমে। কলেজের লেখকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন- উইলিয়াম কেরি, রামরাম বসু, মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার, গোলকনাথ শর্মা, চণ্ডীচরণ মুনসী, রাজীবলোচন মুখ্যোপাধ্যায়, হরপ্রসাদ রায়।
উইলিয়াম কেরি :
উইলিয়াম কেরির উল্লেখযোগ্য রচনা ‘ইতিহাসমালা’ ও ‘কথোপকথন’। কথ্যভাষায় গদ্য রচনায় তিনি পরবর্তী গদ্যকারদের পথপ্রদর্শক হয়ে উঠেছিলেন।
রামরাম বসু :
রামরাম বসুর লেখা দুটি গ্রন্থ হলো ‘রাজা প্রতাপাদিত্য চরিত্র’ ও ‘লিপিমালা’।‘রাজা প্রতাপাদিত্য চরিত্র’ বাঙালির লেখা প্রথম মুদ্রিত গ্রন্থ ও মৌলিক রচনা।
মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার :
ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের সফল গদ্য রচয়িতা মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার। তাঁর রচিত গ্রন্থগুলি হলো- ‘বত্রিশ সিংহাসন’, ‘রাজাবলি’, ‘হিতোপদেশ’, ‘প্রবোধচন্দ্রিকা’, ‘বেদান্তচন্দ্রিকা’। বাংলা গদ্যের যে আদর্শ রূপ ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের লেখনীতে ধরা পড়েছিল তার সূচনা হয়েছিল মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কারের হাতে।
অপ্রধান লেখকদের রচনা :
চণ্ডীচরণ মুনসীর ‘তোতা ইতিহাস’, হরপ্রসাদ রায়ের ‘পুরুষপরীক্ষা’ ইত্যাদি গ্রন্থও বাংলা গদ্য রচনার প্রথম যুগের উল্লেখযোগ্য নিদর্শন।
অনেক ত্রুটি ও অসংগতি থাকা সত্যেও বাংলা গদ্যের সূচনাপর্বে গদ্যের বিকাশ ও বিবর্তনে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয়।
আরও পড়ুন 👇
বাংলা গদ্যের বিকাশে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান