প্রশ্ন : “আঁচর ভরিয়া যদি মহানিধি পাই।
তব হাম পিয়া দূর দেশে না পাঠাই।।” – কে, কোন প্রসঙ্গে এই মন্তব্যটি করেছেন? শ্রীরাধার মধ্য দিয়ে বক্তার যে মনোভাব ব্যক্ত হয়েছে – তা লেখো। ২+৩
▶মৈথিল কোকিল বিদ্যাপতি রচিত ‘ভাব – সম্মিলন’ কবিতায় শ্রীমতী রাধিকা এই মন্তব্যটি করেছেন। শ্রীমতী রাধিকা তাঁর মানসমন্দিরে প্রিয়তম মাধবকে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়েছেন। মনোজগতে শ্রীকৃষ্ণকে পেয়ে শ্রীমতী রাধিকা এতটাই সুখ পেয়েছেন যে, কেউ যদি তাঁকে আঁচল ভরে অগাধ ধনরত্ন দান করেন তবুও তিনি মাধবকে সঙ্গছাড়া করবেন না। রাধার অন্তরে আনন্দময় ভাব ব্যক্ত করবার প্রসঙ্গে আলোচ্য মন্তব্যটি করেছেন।
শ্রীকৃষ্ণ বৃন্দাবন ছেড়ে মথুরায় চলে গেলে শ্রীমতী রাধিকা বিরহের মর্ম যন্ত্রণায় কাতর হয়ে পড়েন। কৃষ্ণ অদর্শনে তার হৃদয় দীর্ণ হয়েছে বারে বারে। আজ মানসমন্দিরের কল্পরাজ্য প্রিয়তম শ্রীকৃষ্ণের মুখচন্দ্র দর্শন করে শ্রীমতী রাধিকার দুঃখের দীপ নির্বাপিত হয়েছে। তিনি সুখের সাগরে অবগাহন করেছেন। কেউ যদি শ্রীরাধাকে আঁচল ভরে মহামূল্যবান রত্নসামগ্রী দান করেন, সেই দান শ্রীরাধা উপেক্ষা করবেন। তিনি কোনো মূল্যেই তাঁর প্রেমাস্পদ শ্রীকৃষ্ণকে দূর দেশে পাঠাতে পারবেন না। কেননা শ্রীকৃষ্ণই তাঁর একমাত্র অবলম্বন। শ্রীকৃষ্ণ তাঁর কাছে শীতের আচ্ছাদন, গ্রীষ্মের বাতাস, বর্ষার ছাতা আর অকুল পাথারের তরণীতুল্য। এখানে শ্রীমতী রাধিকার কৃষ্ণের প্রতি তীব্র ভালোবাসার মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে।
আরও পড়ুন :