মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্নোত্তর
2017
বিভাগ—ক
১. সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো:১x২০=২০
১.১ ভারতে ফুটবল খেলা প্রবর্তন করেন —
উত্তরঃ (ক) ইংরেজরা
১.২ বিপিনচন্দ্র পাল লিখেছেন —
উত্তরঃ (ক) সত্তর বৎসর
১.৩ ‘বামাবোধিনী’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন —
উত্তরঃ (ক) উমেশচন্দ্র দত্ত
১.৪ সাধারন জনশিক্ষা কমিটি গঠিত হয় —
উত্তরঃ (ঘ) ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে
১.৫ নববিধান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন —
উত্তরঃ (খ) কেশবচন্দ্র সেন
১.৬ সুই মুন্ডা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন —
উত্তরঃ (খ) কোল বিদ্রোহ
১.৭ ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে অরণ্য আইনে অরণ্যকে ভাগ করা হয় —
উত্তরঃ (খ) তিনটি স্তরে
১.৮ ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ বলেছিলেন —
উত্তরঃ (গ) বি ডি সাভারকার
১.৯ ভারতের প্রথম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হল —
উত্তরঃ (ক) ভারত সভা
১.১০ ‘ভারতমাতা’ চিত্রটি আঁকেন —
উত্তরঃ (ক) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
১.১১ ভারতে ‘হাফ টোন’ প্রিন্টিং পদ্ধতি প্রবর্তন করেন —
উত্তরঃ (ক) উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
১.১২ বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করেন —
উত্তরঃ (খ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
১.১৩ ‘একা’ আন্দোলনের নেতা ছিলেন —
উত্তরঃ (ক) মাদারি পাসি
১.১৪ নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা হয়েছিল —
উত্তরঃ (খ) ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে
১.১৫ বারদৌলি সত্যাগ্রহ হয়েছিল —
উত্তরঃ (ঘ) গুজরাটে
১.১৬ বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন হয়েছিল —
উত্তরঃ (খ) ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে
১.১৭ মাতঙ্গিনী হাজরা ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন যে স্থানে —
উত্তরঃ (ক) তমলুক
১.১৮ দীপালী সংঘ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন —
উত্তরঃ (খ) লীলা নাগ (রায়)
১.১৯ ভারতের ‘লৌহমানব’ বলা হয় —
উত্তরঃ (খ) সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলকে
১.২০ ‘ট্রেন টু পাকিস্তান’ লিখেছেন —
উত্তরঃ (গ) খুশবন্ত সিং
বিভাগ—খ
২. যে-কোনো ষোলোটি প্রশ্নের উত্তর দাও ( প্রতিটি উপবিভাগ থেকে অন্তত একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে) : ১x১৬=১৬
উপবিভাগ—২.১
একটি বাক্যে উত্তর দাও:
২.১.১ ‘সোমপ্রকাশ’ পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন ?
উত্তরঃ দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ
২.১.২ সরকারি নথিপত্র কোথায় সংরক্ষণ করা হয় ?
উত্তরঃ মহাফেজখানায়
২.১.৩ বাংলায় কোন শতককে ‘নবজাগরণের শতক’ বলা হয় ?
উত্তরঃ উনিশ শতককে
২.১.৪ ‘উলগুলান’ বলতে কী বোঝায় ?
উত্তরঃ চরম বিশৃঙ্খলা
উপবিভাগ— ২.২
ঠিক বা ভুল নির্ণয় করো :
২.২.১ শ্রীরামকৃষ্ণ রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
উত্তরঃ ভুল
২.২.২ মহাবিদ্রোহের সময় ভারতের গভর্নর জেনারেল ছিলেন লর্ড ডালহৌসি।
উত্তরঃ ভুল
২.২.৩ ‘গোরা’ উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইউরোপীয় সমাজকে সমর্থন করেছিলেন।
উত্তরঃ ভুল
২.২.৪ গান্ধিজি ও ড. আম্বেদকর যৌথভাবে দলিত আন্দোলন করেছিলেন।
উত্তরঃ ভুল
উপবিভাগ—২.৩
‘ক’ স্তম্ভের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মেলাও :
‘ক’ স্তম্ভ ‘খ’ স্তম্ভ
২.৩.১ অরবিন্দ ঘোষ (১) আজাদ হিন্দ ফৌজ
২.৩.২ তারকনাথ পালিত (২) বেঙ্গল ন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ
২.৩.৩ নবগোপাল মিত্র (৩) বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট
২.৩.৪ রশিদ আলি (৪) হিন্দুমেলা
উত্তরঃ
২.৩.১ অরবিন্দ ঘোষ – (২) বেঙ্গল ন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ
২.৩.২ তারকনাথ পালিত -(৩) বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট
২.৩.৩ নবগোপাল মিত্র – (৪) হিন্দুমেলা
২.৩.৪ রশিদ আলি – (১) আজাদ হিন্দ ফৌজ
উপবিভাগ – ২.৪
প্রদত্ত ভারতবর্ষের রেখামানচিত্রে নিম্নলিখিত স্থানগুলি চিহ্নিত করো ও নাম লেখ :
২.৪.১ সাঁওতাল বিদ্রোহের এলাকা,
২.৪.২ নীল বিদ্রোহের একটি কেন্দ্র,
২.৪.৩ দেশীয় রাজ্য হায়দ্রাবাদ,
২.৪.৪ পুনর্গঠিত রাজ্য গুজরাট
উত্তর:
উপবিভাগ—২.৫
নিম্নলিখিত বিবৃতিগুলির সঙ্গে সঠিক ব্যাখ্যাটি নির্বাচন করো :
২.৫.১ বিবৃতি : ‘একা’ আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল উত্তরপ্রদেশে ।
উত্তরঃ ব্যাখ্যা ২ : এটি ছিল একটি কৃষক আন্দোলন ।
২.৫.২ বিবৃতি : ভারত সরকার ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা শুরু করে ।
উত্তরঃ ব্যাখ্যা ৩ : এর উদ্দেশ্য ছিল দেশব্যাপী সাম্যবাদী কার্যকলাপ দমন করা ।
২.৫.৩ বিবৃতি : বিংশ শতকের ভারতে উপনিবেশ বিরোধী আন্দোলনে বামপন্থীদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল ।
উত্তরঃ ব্যাখ্যা ৩ : তারা ছিল শ্রমিক কৃষকদের ব্রিটিশ বিরোধী ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের সমর্থক ।
২.৫.৪ বিবৃতি : ভারতের নারীরা জাতীয় আন্দোলনে প্রথম অংশ নিয়েছিল বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের সময় ।
উত্তরঃ ব্যাখ্যা ৩ : কারণ তারা বিদেশি দ্রব্য বর্জন করতে চেয়েছিল।
বিভাগ—গ
৩. দুটি অথবা তিনটি বাক্যে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও (যে-কোনো ১১টি) ২x১১=২২
৩.১ সামাজিক ইতিহাস কী ?
উত্তরঃ ১৯৬০-এর দশক থেকে এডওয়ার্ড থমসন, এরিক হবসবম প্রমুখ ঐতিহাসিকদের হাত ধরে জন্ম নেয় নতুন সামাজিক ইতিহাস। দরবারি ইতিহাসের পরিবর্তে সাধারণ মানুষের প্রাত্যহিক জীবন, সামাজিক – অর্থনৈতিক সম্পর্ক, ধর্ম-সংস্কৃতি এভাবে সামগ্রিক যাপনের কথা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সামাজিক ইতিহাস চর্চায়।হ্যারল্ড পার্কিন ,রনজিৎ গুহ প্রমুখরা এই ধারাকে আরো সমৃদ্ধ করে তোলেন।
৩.২ ইতিহাসের উপাদানরূপে সংবাদপত্রের গুরুত্ব কী ?
উত্তরঃ আধুনিক ইতিহাস রচনায় সংবাদপত্রটি প্রকাশিত সংবাদ, সম্পাদকীয়, চিঠিপত্র, নানাবিষয়ের ওপর প্রকাশিত লেখাগুলো ইতিহাস রচনায় বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। অন্যান্য উপাদানের সাথে তুলনা করে সংবাদপত্রে প্রাপ্ত তথ্যাদি প্রাথমিক উপাদানরূপে বিবেচিত হয়। সমকালীন সমাজ, অর্থনীতি ও রাজনীতির বার্তাবহ সংবাদপত্র ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ও আধুনিক ভারতের গঠনের ইতিহাস রচনায় বিশেষ সহায়ক।
৩.৩ বাংলার নারীশিক্ষা বিস্তারে রাজা রাধাকান্ত দেবের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো ।
উত্তরঃ রাজা রাধাকান্ত দেব সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারে। হিন্দু কলেজ, স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠায় অন্যতম উদ্যোগী রাজা রাধাকান্ত দেব নারী শিক্ষার বিস্তারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। বেথুনে স্কুল, ডাফস্কুল গঠনে, নারীদের পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার জন্য অনুপ্রাণিত করতে বিভিন্ন সভা আয়োজনে রাধাকান্ত দেব বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন।
৩.৪ ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ বিভক্ত হল কেন ?
উত্তরঃ ১৮৬৬ খ্রিস্টাদে আদি ও ভারতবর্ষীয় এই দু’ভাগে ব্রাহ্মসমাজ বিভক্ত হয়েছিল সংস্কারের প্রশ্নে। কেশবচন্দ্র সেনের খ্রিস্টধর্ম প্রীতি, গুরুবাদের প্রতি আসক্তি, ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে নিজের নাবালিকা কন্যা সুনীতিদেবীর সাথে কোচবিহারের মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়নের বিবাহদানের প্রশ্নে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজে কেশব সেনের অনুগামী ছিলেন যারা তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়।১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামীকে আচার্য করে শিবনাথ শাস্ত্রীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ। অন্যদিকে কেশবচন্দ্রের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় ব্রাহ্মসমাজ ১৮৮০ খিষ্টাব্দে পরিণত হয় নববিধান ব্রাহ্মসমাজে।
৩.৫ ফরাজি আন্দোলন কি ধর্মীয় পুনর্জাগরণের আন্দোলন ?
উত্তরঃ ইসলামের সংস্কার ও পুনরুজ্জীবনের আদর্শ নিয়ে ফরাজি আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল । ‘ফরাজি’ শব্দের অর্থ ইসলামের অবশ্য পালনীয় কর্তব্য। ইসলাম শাস্ত্রে সুপন্ডিত হাজী শরিয়ত-উল্লাহ ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে কোরান নির্দেশিত পথে ধর্ম সংস্কারের জন্য এই আন্দোলনের সূচনা করেন । আন্দোলনের প্রত্যক্ষ কারণ হিন্দু জমিদার কর্তৃক ধর্মীয় কারণে ফরাজিদের উপর অতিরিক্ত ‘কর’ বা ‘আবয়াব’ আদায় । তবে উপযুক্ত নেতৃত্বের অভাব সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি এবং দমননীতির কারণে আন্দোলন ব্যর্থ হয়। ফরাজিদের শক্তির উৎস ছিল ধর্মীয় ঐক্য কিন্তু অবধারিতভাবে এটি একটি কৃষক অভ্যুত্থান।
৩.৬ নীলকররা নীলচাষিদের ওপর কীভাবে অত্যাচার করত তা সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
উত্তরঃ ১৮৫৯-১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে নীলকর সাহেবদের সীমাতীত অত্যাচারের ও শোষণের প্রতিবাদে কৃষকরা তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। নীলকররা নীলচাষীদের নানাভাবে অত্যাচার করত, নীলকুঠিতে ধরে এনে নীলচাষে বাধ্য করা হতো করা হতো, প্রহার করা হতো, হত্যা করা হতো। কৃষকেরা নীল -চাষে বাধ্য না হলে তাদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিত, কৃষকদের স্ত্রী ও নারীদের সম্মানে হাত দিতেও পিছপা হতো না।
৩.৭ উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধকে ‘সভাসমিতির যুগ’ বলা হয় কেন?
উত্তরঃ উনবিংশ শতকে ব্রিটিশদের উদ্যোগে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ঘটে এবং ভারতবর্ষের মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের মানুষ শিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি জাতীয়তাবোধে উদ্দীপিত হয়ে ওঠে। মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের উপলব্ধি করে যে ব্যক্তিগতভাবে বিচ্ছিন্ন আন্দোলনের মাধ্যমে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করা সম্ভব নয়। এর একমাত্র উপায় হল ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন। এই উদ্দেশ্যে সেই সময়ে বাংলা মাদ্রাজ ও বোম্বেতে অনেক সভা সমিতি গড়ে ওঠে ।এই কারণে উনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধকে ‘সভা সমিতির যুগ’ বলেছেন।
৩.৮ ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাস কীভাবে জাতীয়তাবাদী ভাবধারাকে উদ্দীপ্ত করেছিল ?
উত্তরঃ সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে রচিত ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসের মাধ্যমে ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবোধের প্রসার ঘটে। আনন্দমঠের সন্তানদের উচ্চারিত ‘বন্দে মাতরম’ সংগীত বিপ্লবীদের মন্ত্রমুগ্ধ করেছিল। এই উপন্যাসে বঙ্কিমচন্দ্র পরাধীন ভারতমাতার দুর্দশার চিত্র দেশবাসীর সামনে তুলে ধরে দেষবাসীকে মুক্তি আন্দোলনে আন্দোলিত করেন। সন্ন্যাসী ফকির বিদ্রোহের জ্বলন্ত দলিল স্বরূপ ‘আনন্দমঠ’ দেশপ্রেমের জোয়ার এনেছিল।
৩.৯ উনিশ শতকে বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশে ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স’ -এর ভূমিকা কী ছিল ?
উত্তরঃ উনিশ শতকে বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশেরর জন্য মহেন্দ্রলাল সরকার ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স’ প্রতিষ্ঠা করেন । এই বিজ্ঞান কেন্দ্রে সম্পূর্ণ নিজের তত্ত্বাবধানে স্বাধীনভাবে বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে মৌলিক গবেষণার ব্যবস্থা করা হয় ও বিজ্ঞান বিষয়ক প্রকৃত আয়োজন করা হয়। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের বিজ্ঞান চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে তোলা হয়।
৩.১০ ‘বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল ?
উত্তরঃ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯২১ সালে বীরভূম জেলার শান্তিনিকেতনে স্নিগ্ধ পল্লি প্রকৃতির বুকে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন । বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল প্রাচীন ভারতীয় আশ্রমিক শিক্ষার সঙ্গে আধুনিক শিক্ষাচেতনার সম্মিলন। শিক্ষার্থীর জীবনের পরিপূর্ণ বিকাশ সাধন, শিক্ষার সঙ্গে প্রকৃতি ও মানুষের সমন্বয়ে গড়ে তোলা আদর্শ শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা; আদর্শ শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলার মৌলিক নীতিরূপ স্বাধীনতা, সৃজনশীলতার বিকাশ।
৩.১১ নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ?
উত্তরঃ ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে লালা লাজপত রায়ের সভাপতিত্বে বোম্বাইতে নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য গুলি হল-
i) বিভিন্ন স্থানে শ্রমিক আন্দোলনের কার্যকলাপকে নিয়ন্ত্রণ করা।
ii) বিভিন্ন অঞ্চলের ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনকে ছড়িয়ে দেওয়া ।
iii)শ্রমিকদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতি সাধন করা।
iv)শ্রমিকদের সমাজতন্ত্রের সাথে যুক্ত করা।
৩.১২ ‘ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি’ কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?
উত্তরঃ ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দের ১লা নভেম্বর ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি গড়ে উঠেছিল শ্রমিকদের কাজের সময়সীমা কমানো, সর্বনিম্ন মজুরির হার নির্ধারণ করা, জমিদারি প্রথার অবসান ঘটানো এবং পুনরায় নতুনভাবে শ্রমিকদের সংগঠিত করার উদ্দেশ্যে ।মোজাফফর আহমেদ, কাজী নজরুল ইসলাম প্রমুখের নেতৃত্বে ‘লাঙ্গল’ ও ‘গণবাণী’ পত্রিকাকে মুখপাত্র করে প্রাথমিকভাবে কংগ্রেসের মধ্য থেকে ও পরবর্তীতে কমিউনিস্ট আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্তভাবে কৃষকদের স্বার্থরক্ষার উদ্দেশ্যে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
৩.১৩ রশিদ আলি দিবস কেন পালিত হয়েছিল ?
উত্তরঃ আজাদ হিন্দ ফৌজের ক্যাপ্টেন দিল্লির লালকেল্লায় বিচার শুরু হলে তাকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয় । এই ঘটনার প্রতিবাদে ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১১ থেকে ১৩ই ফেব্রুয়ারি কলকাতা গণ আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে। ১১ই ফেব্রুয়ারি ছাত্ররা কলকাতার রাজপথে আন্দোলনের নামে এবং প্রতিবাদ দিবস রূপে ১২ই ফেব্রুয়ারি দিনটি রশিদ আলি দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
৩.১৪ দলিত কাদের বলা হয় ?
উত্তরঃ ব্যাকরণ অনুযায়ী ‘দলিত’ শব্দটি একটি বিশেষণ, যার অর্থ মাড়িয়ে যাওয়া হয়েছে এমন বা পদদলিত।১৯৩০-এর দশক থেকে অস্পৃশ্যরা নিজেদের দলিত বলে পরিচয় দিতে শুরু করে।এরা হল বর্ণ হিন্দু সমাজের মূল স্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন। এরা সমাজের উচ্চ শ্রেণীর মানুষের কাছে অত্যাচারিত হতো। ডঃ বি আর আম্বেদকরের নেতৃত্বে দলিত আন্দোলন বৃহত্তর রূপ নেয়।
৩.১৫ দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তি দলিল বলতে কী বোঝায় ?
উত্তরঃ ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর ভারত সরকার দেশীয় রাজ্যগুলির ভবিষ্যৎ নির্ধারণের প্রশ্নে এক বলিষ্ঠ নীতি গ্রহণ করেছিল । ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২৭ জুন সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের অধীনে স্থাপিত হলো দেশীয় রাজ্য দপ্তর এবং এর সচিব হলেন ভি পি মেনন । মাউন্টব্যাটেনের পরামর্শে প্রায় সমস্ত দেশীয় রাজ্যগুলিকে বিশাল পরিমাণ ভাতা , খেতাব ও অন্যান্য সুবিধার প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে ‘Instrument of Acession’ নামে একটি দলিলে স্বাক্ষর করে ভারত ইউনিয়নে যোগদান করান। এটিই দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তির দলিল নামে খ্যাত।
৩.১৬ ১৯৫০ সালে কেন নেহেরু-লিয়াকৎ চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল ?
উত্তরঃ ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগষ্ট স্বাধীনতার পর ভারতের কাছে প্রধান সমস্যা ছিল উদ্বাস্তু সমস্যা। পাকিস্তান থেকে ভারতে বহু শরণার্থী চলে আসে এবং ভারত থেকে পাকিস্তান বহু শরণার্থী চলে যায় । দাঙ্গা বহুল এই সমস্যার মোকাবিলা করার জন্য ১৯৫০ সালে ৮ই এপ্রিল নেহেরু লিয়াকৎ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর মাধ্যমে ভারত সরকার ১৯৪৭ থেকে ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত উদ্বাস্তু পুনর্বাসনে উদ্যোগী হয়।
বিভাগ—ঘ
সাত-আটটি বাক্যে যে-কোনো ছ-টি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৪x৬=২৪
(প্রতিটি উপবিভাগ থেকে অন্তত একটি করে প্রশ্নের উত্তর দাও):
উপবিভাগ—ঘ.১
৪.১ নারী ইতিহাসের ওপর একটি টীকা লেখো ।
৪.২ স্বামী বিবেকানন্দের ধর্মসংস্কারের আদর্শ ব্যাখ্যা করো ।
উপবিভাগ—ঘ.২
৪.৩ ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে সাঁওতালরা বিদ্রোহ করেছিল কেন ?
৪.৪ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের কীরূপ মনোভাব ছিল ?
উপবিভাগ—ঘ.৩
৪.৫ ছাপা বইয়ের সঙ্গে শিক্ষাবিস্তারের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করো ।
৪.৬ কারিগরি শিক্ষার বিকাশে ‘বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট’ -এর কী ভূমিকা ছিল ?
উপবিভাগ—ঘ.৪
৪.৭ দলিত আন্দোলন বিষয়ে গান্ধি-আম্বেদকর বিতর্ক নিয়ে একটি টীকা লেখো ।
৪.৮ স্বাধীনতার পরে ভাষার ভিত্তিতে ভারত কীভাবে পুনর্গঠিত হয়েছিল ?
বিভাগ—ঙ
৫) পনেরো-ষোলোটি বাক্যে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও: ৮x১=৮
৫.১ শিক্ষাবিস্তারে প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদী বিতর্ক কী ? উচ্চশিক্ষার বিকাশে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা আলোচনা করো । (৫+৩)
৫.২ সংক্ষেপে মহাবিদ্রোহের (১৮৫৭) চরিত্র বিশ্লেষণ করো ।
৫.৩ সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো ।
বিভাগ-ঘ ও বিভাগ-ঙ উত্তর :
সুমন