Principles of Language Teaching
মাতৃভাষা শিক্ষাদানের নীতি
বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি মনোবিজ্ঞাননির্ভর। আর শিক্ষার মূল কেন্দ্রবিন্দুই হল শিশু। অর্থাৎ বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা হল শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থায। শিক্ষাদানের নীতি ও পদ্ধতিতে বর্তমান এসেছে বহু পরিবর্তন। এখানে মাতৃভাষা শিক্ষাদানের বিভিন্ন নীতি সংক্ষেপে আলোচনা করা হল।
ভাষা :
মানুষের বাগযন্ত্রের সাহায্যে উচ্চারিত অর্থবহ ধ্বনিসমষ্টিকে ভাষা বলে।
মানুষের মনের ভাব প্রকাশের সর্বোৎকৃষ্ট মাধ্যম হল এই ভাষা ।
মাতৃভাষা :
মাতৃ মানে মা অর্থাৎ মাতৃভাষা মানে মায়ের ভাষা। জন্মের পর থেকে আমরা যে ভাষায় মনের ভাব প্রকাশ করি তাকে বলে মাতৃভাষা।
সার্থক শিক্ষণের মূলে রয়েছে তিনটি বিষয় –
ক) নীতি (Pprinciple)
খ) কৌশল (Technique)
গ) পদ্ধতি (Method)
নীতি হল কাজের চিন্তা, কৌশল হল কাজের কারিগরি আর চিন্তা ও কাজের সংযোগ হল পদ্ধতি।
মাতৃভাষা শিক্ষণের নীতি :
ভাষা শিক্ষনের নীতি গুলি করে ওঠে ভাষাবিজ্ঞান এবং মনোবিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে। ভাষাবিজ্ঞান এর বিষয়বস্তু হলো ভাষার বিভিন্ন নিয়ম। অন্যদিকে মনোবিজ্ঞানের বিষয় হল শিখনের তত্ত্ব ।
তাই ভাষাবিজ্ঞান ও মনোবিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে শিখনের নীতি করে ওঠে।
🎯 শিখন তত্ত্বের প্রয়োগ :
মনোবিজ্ঞানীদের মতে শিখন হল – “অতীত অভিজ্ঞতা এবং প্রশিক্ষণের প্রভাবে আচরণের ধারা পরিবর্তনের প্রক্রিয়া।” (Learning is the modification of behavior through experience and training.)
শিক্ষাদান সম্পর্কে মনোবিজ্ঞানীরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মতবাদ প্রকাশ করে এসেছেন। যেমন —
ক) থর্নডাইকের সংযোজনবাদ (Connectionism) তত্ত্ব
খ) প্যাভলভের অনুবর্তনবাদ (Theory of Conditioning)
গ) গেস্টাল্ট -এর অন্তর্দৃষ্টি তত্ত্ব (Theory of Insight)
ঘ) কার্ট লিউইনের ক্ষেত্রভিত্তিক তত্ত্ব (Field Theory)
এসবের মধ্যে থর্নডাইকের সংযোজনবাদ তত্ত্ব যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। থর্নডাইকের সংযোজনবাদ তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে ‘প্রচেষ্টা ও ভুল তত্ত্ব’ (Trial and Error Method)
এই তত্ত্ব অনুযায়ী যেকোনো প্রাণি শেখে বারবার চেষ্টা ও ভুলের মাধ্যমে । কোনো কিছু শিখতে হলে উদ্দীপকের উপযোগী নির্ভুল প্রতিক্রিয়াটি অনেকগুলো ভুল প্রতিক্রিয়ার মধ্য থেকে খুঁজে বার করতে হয় । পরপর প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোই এই তত্ত্বের লক্ষ্য। ভুল প্রতিক্রিয়া বাতিল করে সঠিক বা সফল পতিক্রিয়া নির্বাচনের মাধ্যমে প্রাণির শিখন সম্ভব হয়।
🎯 মনোবৈজ্ঞানিক পথে শিক্ষাদান :
🔵 জানা বিষয় থেকে অজানা বিষয়ে যাওয়া
🔵 সহজ থেকে জটিল
🔵 মূর্ত থেকে বিমূর্ত
🔵 বিশেষ থেকে সাধারণ বিষয়
🔵 সমগ্র থেকে অংশে
🔵 অভিজ্ঞতা লব্ধ জ্ঞান থেকে যুক্তিনির্ভর জ্ঞান
🎯 কর্মসম্পাদনের মাধ্যমে শিক্ষাদান (Learning by doing)
🎯দৃশ্য-শ্রাব্য নির্ভর (Audio-visual aid) উপাদানের মাধ্যমে শিক্ষাদান :
ক) মডেল, চার্ট, রেডিও, গ্রামোফোন, টেলিভিশন, ফিল্ম প্রজেক্টর,
খ) বিতর্কসভা, অভিনয়, আবৃত্তি, গান, নাটক, সরব পাঠ
🎯 পদ্ধতি ভিত্তিক পাঠদান
শ্রেণি শিক্ষণকে সার্থক করে তুলতে হলে পাঠ-পরিকল্পনা একান্ত আবশ্যিক। এই পরিকল্পনাকে সফল করতে হলে কয়েকটি ব্যাপার শিক্ষককে মনে রাখতে হবে-
🔵 শ্রেণিকক্ষের অনুকূল পরিবেশ
🔵 পাঠক্রম শিক্ষার্থীর উপযোগী
🔵 পাঠ্যপুস্তক হবে উন্নত ও নির্ভুল
🔵 শিক্ষকের ভূমিকা বন্ধুর মতো
🔵 গ্রন্থাগার হবে সমৃদ্ধ
🔵 পাঠ-পরিকল্পনা মনন ও চিন্তনের ভিত্তিতে
🔵 সহপাঠক্রমিক কার্যাবলীতে গুরুত্ব
🔵 নিয়মিত পরীক্ষা ও মূল্যায়নের ব্যবস্থা
🔵 গৃহকাজের উপর গুরুত্ব