প্রশ্নঃ “আমি তোমায় কথা দিচ্ছি মাসিমা”- কে, কাকে, কোন প্রসঙ্গে, কী কথা দিয়েছিল নিজের ভাষায় লেখো। ৫
অথবা, “কে, নিরঞ্জন এলি?”- নিরঞ্জন কে? কোন্ পরিস্থিতিতে গল্পকথক নিরঞ্জনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন? ২+৩
উত্তর : প্রশ্নোদ্ধৃত অংশটি বিশিষ্ট সাহিত্যিক প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। গল্পকথক যামিনীর অসহায় বৃদ্ধা মাকে যামিনীকে গ্রহণ করার কথা দিয়েছিলেন।
( নিরঞ্জন কে ? :
প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পে নিরঞ্জন হলো যামিনীর মায়ের দূর সম্পর্কের বোনপো। সে যামিনীকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।)
আলোচ্য গল্পে দেখা যায়, মৎস্য শিকারের উদ্দেশ্যে গল্পকথক দু’জন বন্ধুর সঙ্গে তেলেনাপোতা গ্রামে হাজির হন। মাছ ধরতে না পারলেও একটি মেয়ে কথকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। মেয়েটি কথকের বন্ধু মণিদার জ্ঞাতিস্থানিয়া। নাম যামিনী। দুপুরে যামিনীই সকলের খাবার আয়োজন করেছিল।
ঘটনাক্রমে কথক জানতে পারেন যে,নিরঞ্জন নামের কোন এক যুবক যামিনীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদেশে চাকরি করার নাম করে চলে যায় এবং আর ফিরে আসে না। এদিকে যামিনীর বৃদ্ধা মা মণির সঙ্গীদের কাউকে নিরঞ্জন ভেবে যামিনীকে জোর করে নিরঞ্জনকে তার কাছে নিয়ে আসার জন্য। অসহায় যামিনী মণিদাকে ডাকতে এসেছিল তার মাকে শান্ত করার জন্য। মণিদা বিরক্ত হলেও গল্পকথক স্বেচ্ছায় যেতে চান যামিনীর মায়ের কাছে।
মণিদার সঙ্গে যামিনীর মায়ের কাছে গেলে শয্যাশায়ী অন্ধ বৃদ্ধা কথককে ‘নিরঞ্জন’ বলে সম্বোধন করে বলেন – “ এবার তো আর অমন করে পালাবি না?” কথক আত্মপরিচয় গোপন করে নিরঞ্জনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বলে উঠেন – “না, মাসিমা আর পালাব না।” এরপর যামিনীর মায়ের অনুরোধে নিরঞ্জনরূপী কথক যামিনীকে গ্রহণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বলেছিলেন – “ আমি তোমায় কথা দিচ্ছি মাসিমা। আমার কথার নড়চড় হবে না।” এইভাবেই গল্পকথক নিরঞ্জনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন।