প্রশ্ন : ‘ভাব সম্মিলন’ কাকে বলে? আলোচ্য পদটিতে রাধার আনন্দের যে চিত্র ফুটে উঠেছে তা নিজের ভাষায় বর্ণনা করো। [সংসদ প্রদত্ত নমুনা প্রশ্ন] ২+৩=৫
উত্তরঃ
🔷 ভাব সম্মিলন :
‘ভাব সম্মিলন’ কথার অর্থ হলো ভাবের জগতে মিলন। শ্রীকৃষ্ণ মথুরায় গমন করলে শুরু হয় রাধিকার তীব্র বিরহ যন্ত্রণা । বিচ্ছেদের বেদনায় কাতর রাধা কল্পনার মাধ্যমে কৃষ্ণের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন । মানস বৃন্দাবনে এই অপ্রাকৃত মিলনের নাম ভাব সম্মিলন বা ভাবোল্লাস।
🔷 আনন্দের রূপচিত্র:
আলোচ্য পদে শ্রীমতী রাধিকার ভাবোল্লাসের আনন্দময় রূপচিত্রকে কবি বিদ্যাপতি অসাধারণ কাব্যিক ছন্দে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। দীর্ঘ বিরহের পর শ্রীমতী রাধিকা কল্পনায় আপন দেহমন্দিরে কৃষ্ণকে পেয়ে মিলনের আনন্দে আত্মহারা। রাধা সখীকে বলেছেন –
“কি কহব রে সখী আনন্দ ওর”
প্রিয়তমের মুখদর্শনে রাধিকা আজ চরম সুখ উপলব্ধি করেছেন, তাঁর সর্বশরীর আনন্দে পুলকিত হচ্ছে। বিরহের দিনগুলিতে রাধা যত দুঃখ পেয়েছে আজ প্রিয়তমের সঙ্গে মিলনে ততটাই সুখ লাভ করেছে।
শ্রীমতী রাধিকা প্রিয়তম কৃষ্ণকে আর সঙ্গছাড়া করতে চান না । তাঁর কন্ঠ থেকে আমরা শুনি-
“আঁচর ভরিয়া যদি মহানিধি পাই।
তব হাম পিয়া দূর দেশে না পাঠাই।।”
কৃষ্ণই তাঁর জীবনের একমাত্র অবলম্বন। কৃষ্ণ তাঁর কাছে শীতের আচ্ছাদন, বর্ষাকালের ছাতা, গ্রীষ্মের বাতাস ও দরিয়ার নৌকাতুল্য। কবি বিদ্যাপতি শ্রীমতী রাধিকার আনন্দঘন মুহূর্তকে ব্রজবুলি ভাষার মাধ্যমে এই ভাবেই পাঠকের কাছে সুন্দরভাবে উপস্থাপিত করেছেন।