গীতাঞ্জলি হল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুরের
লেখা একটি কাব্যগ্রন্থ। এই
বইয়ে মোট
১৫৭টি গীতিকবিতা সংকলিত
হয়েছে। কবিতাগুলি ব্রাহ্ম –
ভাবাপন্ন ভক্তিমূলক রচনা। এর
বেশিরভাগ কবিতাতেই
রবীন্দ্রনাথ নিজে সুরারোপ
করেছিলেন। ১৯০৮-০৯
সালে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়
এই কবিতাগুলি প্রকাশিত হয়।
এরপর ১৯১০ সালে গীতাঞ্জলি
কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়।
১৯১২ সালে রবীন্দ্রনাথের Song
Offerings কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত
হয়। এতে গীতাঞ্জলি ও
সমসাময়িক আরও
কয়েকটি কাব্যগ্রন্থের
কবিতা রবীন্দ্রনাথ
নিজে অনুবাদ করে প্রকাশ
করেন। ইংরেজি কাব্যগ্রন্থটির
জন্য রবীন্দ্রনাথ
সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার
পেয়েছিলেন।
ঠাকুরের
লেখা একটি কাব্যগ্রন্থ। এই
বইয়ে মোট
১৫৭টি গীতিকবিতা সংকলিত
হয়েছে। কবিতাগুলি ব্রাহ্ম –
ভাবাপন্ন ভক্তিমূলক রচনা। এর
বেশিরভাগ কবিতাতেই
রবীন্দ্রনাথ নিজে সুরারোপ
করেছিলেন। ১৯০৮-০৯
সালে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়
এই কবিতাগুলি প্রকাশিত হয়।
এরপর ১৯১০ সালে গীতাঞ্জলি
কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়।
১৯১২ সালে রবীন্দ্রনাথের Song
Offerings কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত
হয়। এতে গীতাঞ্জলি ও
সমসাময়িক আরও
কয়েকটি কাব্যগ্রন্থের
কবিতা রবীন্দ্রনাথ
নিজে অনুবাদ করে প্রকাশ
করেন। ইংরেজি কাব্যগ্রন্থটির
জন্য রবীন্দ্রনাথ
সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার
পেয়েছিলেন।
১৯০৮ সালের পূজার
ছুটিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
শিলাইদহে গিয়েছিলেন।
ছুটির পর ফিরে
শান্তিনিকেতনে
একটানা পাঁচ মাস ছিলেন। এই
সময় তিনি তাঁর বিখ্যাত
শান্তিনিকেতন প্রবন্ধ
গ্রন্থটি রচনা করেন। পরের বছর
বর্ষা ও শরৎ
কালে তিনি কিছুদিন
শিলাইদহে গিয়েছিলেন।
ফিরে কিছুদিন কলকাতায়
জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে
কাটান। গীতাঞ্জলি
কাব্যগ্রন্থের কবিতা ও
গানগুলি শিলাইদহ,
শান্তিনিকেতন ও কলকাতায়
রচিত হয়। গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থ রচনার
প্রসঙ্গে রবীন্দ্র-গবেষক সুকুমার
সেন লিখেছেন:
রবীন্দ্র-জীবনীকার
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের
মতে:
ইংরেজি অনুবাদ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজেই
গীতাঞ্জলি-র কবিতা ও
গানগুলি ইংরেজি ভাষায়
অনুবাদ করার কাজ শুরু
করেছিলেন। মূল
বাংলা কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত
৫৩টি গান Song offerings সংকলনে প্রকাশিত হয়।
তবে রবীন্দ্রনাথ নিজে সব
কটি কবিতা ও গানের অনুবাদ
করেননি। কয়েকটি অনুবাদ
করেছিলেন ব্রাদার জেমস ও
ব্রিটিশ কবি ও অনুবাদক
জো উইন্টার । রবীন্দ্রনাথ
বাংলা গীতাঞ্জলি’র
১৫৭টি গান/
কবিতা থেকে ইংরেজি গীতাঞ্জলিতে (Song Offerings) মাত্র
৫৩টি স্থান দিয়েছেন।
বাকি ৫৪টি বেছে নিয়েছেন
গীতিমাল্য, নৈবেদ্য, খেয়া,
শিশু, কল্পনা, চৈতালি, উৎসর্গ,
স্মরণ ও অচলায়তন থেকে।
গীতিমাল্য থেকে ১৬টি,
নৈবেদ্য থেকে ১৫টি,
খেয়া থেকে ১১টি, শিশু
থেকে ৩টি,
কল্পনা থেকে ১টি,
চৈতালি থেকে ১টি, উৎসর্গ
থেকে ১টি, স্মরণ
থেকে ১টি এবং অচলায়তন
থেকে ১টি কবিতা/গান
নিয়ে তিনি ইংরেজি গীতা
ঞ্জলির বিন্যাস করেছেন।
অর্থাৎ
ইংরেজি গীতাঞ্জলিতে তি
নি মোট ৯টি গ্রন্থের
কবিতা বা গানের সন্নিবেশ
ঘটিয়েছেন।
অনুবাদের ইতিহাস
১৯১২ খ্রিস্টাব্দের শুরুর
দিকে রবীন্দ্রনাথের
জাহাজযোগে লণ্ডন যাওয়ার
কথা ছিল। যাত্রার
পূর্বে তিনি অর্শ রোগের
কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন
এবং পদ্মা নদীতে নৌকায়
বিশ্রাম নিতে শুরু করেন। এ সময়
তিনি তাঁর
গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থ
থেকে সহজ
ইংরেজিতে অনুবাদ শুরু করেন।
পরবর্তীকালে গীতাঞ্জলি ৫২
টি এবং গীতিমাল্য, নৈবেদ্য,
খেয়া প্রভৃতি আরো নয়টি কাব্য
গন্থ থেকে ৫১টি – সর্বমোট
১০৩টি কবিতার অনুবাদ
নিয়ে একটি পাণ্ডুলিপি তৈরি করেন। এই
পাণ্ডুলিপি সঙ্গে করে রবীন্দ্র
নাথ ২৭ মে ১৯১২ বোম্বাই বন্দর
থেকে বিলেত যাত্রা করেন।
যাত্রকালে আরো কিছু
কবিতা অনুবাদ করে সংযোজন
করেন। তিনি লন্ডনে পৌঁছান
১৬ জুন। এ সময় উইলিয়াম
রোটেনস্টাইনের
সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়
এবং পাণ্ডুলিপিটি তাকে দে
য়া হয়। তিনি টাইপ
করিয়ে পাণ্ডুলিপিটি কবি ইয়েটস সহ আরো কয়েকজন
কাব্যবোদ্ধাকে প্রদান করেন।
১৯১২ খ্রিস্টাব্দের শেষের
দিকে লণ্ডনে
ইন্ডিয়া সোসাইটি কর্তৃক
গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। Song offerings-এর
ভূমিকা লিখেছিলেন
স্বয়ং কবি ইয়েটস্। এ
ভূমিকাটি ছিল একই
সঙ্গে আন্তরিক ও যথেষ্ট
প্রশস্তিতমূলক।
নিজ অনুবাদে রবীন্দ্রনাথ বেশ
স্বাধীনতা নিয়েছিলেন।
আক্ষরিক তো নয়ই
বরং ভাবানুবাদেরও বেশি ;
কখনো কবিতাংশ সংক্ষেপিত
করা হয়েছে কখনো বা স্রেফ
ভাবার্থ করা হয়েছে ; কেবল
কবিতার ভাবসম্পদ অক্ষত
রাখা হয়েছে।
পুস্তকাকারে প্রকাশ
কালে কবি ইয়েটস কিছু
সম্পাদনার কাজ করেছিলেন।
ইংরেজিভাষী সমালোচকরা
সানন্দে তাঁর অনুবাদের উৎকর্ষ
স্বীকার করেছেন।
ছুটিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
শিলাইদহে গিয়েছিলেন।
ছুটির পর ফিরে
শান্তিনিকেতনে
একটানা পাঁচ মাস ছিলেন। এই
সময় তিনি তাঁর বিখ্যাত
শান্তিনিকেতন প্রবন্ধ
গ্রন্থটি রচনা করেন। পরের বছর
বর্ষা ও শরৎ
কালে তিনি কিছুদিন
শিলাইদহে গিয়েছিলেন।
ফিরে কিছুদিন কলকাতায়
জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে
কাটান। গীতাঞ্জলি
কাব্যগ্রন্থের কবিতা ও
গানগুলি শিলাইদহ,
শান্তিনিকেতন ও কলকাতায়
রচিত হয়। গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থ রচনার
প্রসঙ্গে রবীন্দ্র-গবেষক সুকুমার
সেন লিখেছেন:
রবীন্দ্র-জীবনীকার
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের
মতে:
ইংরেজি অনুবাদ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজেই
গীতাঞ্জলি-র কবিতা ও
গানগুলি ইংরেজি ভাষায়
অনুবাদ করার কাজ শুরু
করেছিলেন। মূল
বাংলা কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত
৫৩টি গান Song offerings সংকলনে প্রকাশিত হয়।
তবে রবীন্দ্রনাথ নিজে সব
কটি কবিতা ও গানের অনুবাদ
করেননি। কয়েকটি অনুবাদ
করেছিলেন ব্রাদার জেমস ও
ব্রিটিশ কবি ও অনুবাদক
জো উইন্টার । রবীন্দ্রনাথ
বাংলা গীতাঞ্জলি’র
১৫৭টি গান/
কবিতা থেকে ইংরেজি গীতাঞ্জলিতে (Song Offerings) মাত্র
৫৩টি স্থান দিয়েছেন।
বাকি ৫৪টি বেছে নিয়েছেন
গীতিমাল্য, নৈবেদ্য, খেয়া,
শিশু, কল্পনা, চৈতালি, উৎসর্গ,
স্মরণ ও অচলায়তন থেকে।
গীতিমাল্য থেকে ১৬টি,
নৈবেদ্য থেকে ১৫টি,
খেয়া থেকে ১১টি, শিশু
থেকে ৩টি,
কল্পনা থেকে ১টি,
চৈতালি থেকে ১টি, উৎসর্গ
থেকে ১টি, স্মরণ
থেকে ১টি এবং অচলায়তন
থেকে ১টি কবিতা/গান
নিয়ে তিনি ইংরেজি গীতা
ঞ্জলির বিন্যাস করেছেন।
অর্থাৎ
ইংরেজি গীতাঞ্জলিতে তি
নি মোট ৯টি গ্রন্থের
কবিতা বা গানের সন্নিবেশ
ঘটিয়েছেন।
অনুবাদের ইতিহাস
১৯১২ খ্রিস্টাব্দের শুরুর
দিকে রবীন্দ্রনাথের
জাহাজযোগে লণ্ডন যাওয়ার
কথা ছিল। যাত্রার
পূর্বে তিনি অর্শ রোগের
কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন
এবং পদ্মা নদীতে নৌকায়
বিশ্রাম নিতে শুরু করেন। এ সময়
তিনি তাঁর
গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থ
থেকে সহজ
ইংরেজিতে অনুবাদ শুরু করেন।
পরবর্তীকালে গীতাঞ্জলি ৫২
টি এবং গীতিমাল্য, নৈবেদ্য,
খেয়া প্রভৃতি আরো নয়টি কাব্য
গন্থ থেকে ৫১টি – সর্বমোট
১০৩টি কবিতার অনুবাদ
নিয়ে একটি পাণ্ডুলিপি তৈরি করেন। এই
পাণ্ডুলিপি সঙ্গে করে রবীন্দ্র
নাথ ২৭ মে ১৯১২ বোম্বাই বন্দর
থেকে বিলেত যাত্রা করেন।
যাত্রকালে আরো কিছু
কবিতা অনুবাদ করে সংযোজন
করেন। তিনি লন্ডনে পৌঁছান
১৬ জুন। এ সময় উইলিয়াম
রোটেনস্টাইনের
সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়
এবং পাণ্ডুলিপিটি তাকে দে
য়া হয়। তিনি টাইপ
করিয়ে পাণ্ডুলিপিটি কবি ইয়েটস সহ আরো কয়েকজন
কাব্যবোদ্ধাকে প্রদান করেন।
১৯১২ খ্রিস্টাব্দের শেষের
দিকে লণ্ডনে
ইন্ডিয়া সোসাইটি কর্তৃক
গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। Song offerings-এর
ভূমিকা লিখেছিলেন
স্বয়ং কবি ইয়েটস্। এ
ভূমিকাটি ছিল একই
সঙ্গে আন্তরিক ও যথেষ্ট
প্রশস্তিতমূলক।
নিজ অনুবাদে রবীন্দ্রনাথ বেশ
স্বাধীনতা নিয়েছিলেন।
আক্ষরিক তো নয়ই
বরং ভাবানুবাদেরও বেশি ;
কখনো কবিতাংশ সংক্ষেপিত
করা হয়েছে কখনো বা স্রেফ
ভাবার্থ করা হয়েছে ; কেবল
কবিতার ভাবসম্পদ অক্ষত
রাখা হয়েছে।
পুস্তকাকারে প্রকাশ
কালে কবি ইয়েটস কিছু
সম্পাদনার কাজ করেছিলেন।
ইংরেজিভাষী সমালোচকরা
সানন্দে তাঁর অনুবাদের উৎকর্ষ
স্বীকার করেছেন।
১৯১২ খ্রিস্টাব্দে লন্ডনের
ইন্ডিয়া সোসাইটি কর্তৃক
গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এই
সংস্করণের মুদ্রণ সংখ্যা ছিল
৭৫০। মূল্য সাড়ে চার শিলিং।
এবং আমেরিকায় সোয়া এক
ডলার। এতে কবি ইয়েটস-এর
ভূমিকা এবং রটেনস্টেইন
অঙ্কিত কবির একটি পেন্সিল
স্কেচ প্রতিকৃতি সংযোজন
করা হয়। লন্ডনে রথেনস্টাইনের
বাসগৃহে কবি ইয়েটস্ যেদিন
বন্ধু-
বান্ধবকে গীতাঞ্জলি থেকে
পাঠ করে শুনিয়েছিলেন
সেদিন ঐ আসরে কবি
মে সিনক্লেয়ার উপস্থিত
ছিলেন। রবীন্দ্রনাথের
কবিতায় অভিভূত
হয়ে তিনি নিঃসংকোচে ল
িখেছিলেন : “রবীন্দ্রনাথের
কবিতায় মানুষের সাধারণ
আবেগমথিত নিবেদনের মিলন
হয়েছে এমন এক সঙ্গীত ও
ছন্দে যা সুইনবার্নসুইনবার্নের
চেয়েও পরিশীলীত। এমন এক
সঙ্গীত ও ছন্দ
যা পশ্চিমী শ্রোতার
কাছে অচিন্তনীয়,
যাতে আছে শেলীর অপার্থিব
চেতনা, অদ্ভুত সূক্ষ্মতা ও
তীব্রতা…. এবং তা এমন
সহজিয়া রীতিতে যাতে এই
যাদুকরী-আবেশকেও মনে হয়
পৃথিবীর সবচে’ স্বাভাবিক
রূপবন্ধ। মিল্টনও না, সে মানুষের
হৃদয়ের তুলনায় বড়
বেশি জাঁকালো ;
ওয়ার্ডসওয়ার্থও নয়, সে বড় সূক্ষ্ম
আর অন্তর্লীন …. এমনকি
দান্তেও নয় যদিও
তিনি বাংলার এই
মরমিয়া কবির খুব কাছাঁকাছি।”
দি টাইমস্-এর সুবিখ্যাত
সাহিত্য-সাময়িকী যা টাইমস
লিটারেরী সাপ্লিমেন্ট
(টিএলএস) নামে খ্যাত তার ৭
নভেম্বর ১৯১২ সংখ্যায় (পৃ. ৪৯২)
প্রকাশিত আলোচনাটিই প্রথম
মুদ্রিত গ্রন্থালোচনা।
তখনো রবীন্দ্রনাথ নোবেল
পুরস্কার লাভ করেনি নি।
আলোচনাটির
শুরুতে বলা হয়েছে, “যে-
কোনো শিল্পের অধোগতির
কারণ হলো বিষয়-বস্তুর দীনতা,
আর ব্যক্তিকেন্দ্রিকতার
আদি স্তর
থেকে সার্বজনীনতার
পর্যায়ে উত্তরণের প্রয়োজনীয়
মননশক্তি যদি না থাকে তাহলে কবিতা সবসময়ই এই দীনতায়
আক্রান্ত হবে। যে-
সমাজে ভাববাদিতা বিপুলভা
বে বর্তমান, সে-
সমাজে প্রাণময় শিল্প
হিসেবে বেঁচে থাকতে হ’লে
কবিতাকে উৎক্রান্তি সাধন
করতেই হবে। তা’ না হ’লে,
শিল্পের খাতিরে, কবি-
শক্তি পর্যবসিত হবে অচল
মননশীলতায়, ব্যর্থ হবে নিছক
বিদগ্ধ ব্যতিরেকে অন্য
কারো মনে সাড়া জাগাতে।
ভাবকে জয় করতে না-
পারলে ভাবের কাছে পর্যদুস্ত
কাব্য পরিণত হ’বে গদ্যে।
অতীতে কবিতা যেমন ঘটনা-
আলোড়িত আবেগের বাহন
হয়েছে, তেমনি (এখন)
কবিতাকে লিখতে হবে কী ক’
রে ফুটিয়ে তোলা যায়
ভাবোৎসারিত আবেগ ; আর
তা’
করতে যেয়ে কবিতাকে সেই
কবিতাই থাকতে হ’বে যার
রয়েছে প্রৌঢ়
সাংগীতিকতা, উপমা-
অলংকার আর নিষ্কম্প্র মূল্যবোধ।
আর এই সমস্যাতেই এ যুগের
কবিতা আক্রান্ত্র, এর অস্তিত্ব
বিপন্ন ; এবং অবাক হওয়ার কিছু
নেই যে ইয়েটস সাহেব সেই
ভারতীয় কবির
রচনাকে সানন্দে সম্ভাষণ
জানাবেন যিনি অনায়াসে ঐ
সমস্যাটির সমাধান করেছেন
বলে মনে হয়, যেভাবে হাজার
বছর
আগে চীনা চিত্রকলা রাহুমুক্ত
হয়েছিল।”
এথেমিয়াম পত্রিকায়
লেখা হয়েছিল, “তাঁর
(রবীন্দ্রনাথের) কবিতামালায়
এমন এক স্নিগ্ধ
প্রশান্তি রয়েছে যার
শিক্ষা পশ্চিমের অশান্ত-চিত্ত
মানুষের বড় দরকার।”
ইন্ডিয়া সোসাইটি কর্তৃক
গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এই
সংস্করণের মুদ্রণ সংখ্যা ছিল
৭৫০। মূল্য সাড়ে চার শিলিং।
এবং আমেরিকায় সোয়া এক
ডলার। এতে কবি ইয়েটস-এর
ভূমিকা এবং রটেনস্টেইন
অঙ্কিত কবির একটি পেন্সিল
স্কেচ প্রতিকৃতি সংযোজন
করা হয়। লন্ডনে রথেনস্টাইনের
বাসগৃহে কবি ইয়েটস্ যেদিন
বন্ধু-
বান্ধবকে গীতাঞ্জলি থেকে
পাঠ করে শুনিয়েছিলেন
সেদিন ঐ আসরে কবি
মে সিনক্লেয়ার উপস্থিত
ছিলেন। রবীন্দ্রনাথের
কবিতায় অভিভূত
হয়ে তিনি নিঃসংকোচে ল
িখেছিলেন : “রবীন্দ্রনাথের
কবিতায় মানুষের সাধারণ
আবেগমথিত নিবেদনের মিলন
হয়েছে এমন এক সঙ্গীত ও
ছন্দে যা সুইনবার্নসুইনবার্নের
চেয়েও পরিশীলীত। এমন এক
সঙ্গীত ও ছন্দ
যা পশ্চিমী শ্রোতার
কাছে অচিন্তনীয়,
যাতে আছে শেলীর অপার্থিব
চেতনা, অদ্ভুত সূক্ষ্মতা ও
তীব্রতা…. এবং তা এমন
সহজিয়া রীতিতে যাতে এই
যাদুকরী-আবেশকেও মনে হয়
পৃথিবীর সবচে’ স্বাভাবিক
রূপবন্ধ। মিল্টনও না, সে মানুষের
হৃদয়ের তুলনায় বড়
বেশি জাঁকালো ;
ওয়ার্ডসওয়ার্থও নয়, সে বড় সূক্ষ্ম
আর অন্তর্লীন …. এমনকি
দান্তেও নয় যদিও
তিনি বাংলার এই
মরমিয়া কবির খুব কাছাঁকাছি।”
দি টাইমস্-এর সুবিখ্যাত
সাহিত্য-সাময়িকী যা টাইমস
লিটারেরী সাপ্লিমেন্ট
(টিএলএস) নামে খ্যাত তার ৭
নভেম্বর ১৯১২ সংখ্যায় (পৃ. ৪৯২)
প্রকাশিত আলোচনাটিই প্রথম
মুদ্রিত গ্রন্থালোচনা।
তখনো রবীন্দ্রনাথ নোবেল
পুরস্কার লাভ করেনি নি।
আলোচনাটির
শুরুতে বলা হয়েছে, “যে-
কোনো শিল্পের অধোগতির
কারণ হলো বিষয়-বস্তুর দীনতা,
আর ব্যক্তিকেন্দ্রিকতার
আদি স্তর
থেকে সার্বজনীনতার
পর্যায়ে উত্তরণের প্রয়োজনীয়
মননশক্তি যদি না থাকে তাহলে কবিতা সবসময়ই এই দীনতায়
আক্রান্ত হবে। যে-
সমাজে ভাববাদিতা বিপুলভা
বে বর্তমান, সে-
সমাজে প্রাণময় শিল্প
হিসেবে বেঁচে থাকতে হ’লে
কবিতাকে উৎক্রান্তি সাধন
করতেই হবে। তা’ না হ’লে,
শিল্পের খাতিরে, কবি-
শক্তি পর্যবসিত হবে অচল
মননশীলতায়, ব্যর্থ হবে নিছক
বিদগ্ধ ব্যতিরেকে অন্য
কারো মনে সাড়া জাগাতে।
ভাবকে জয় করতে না-
পারলে ভাবের কাছে পর্যদুস্ত
কাব্য পরিণত হ’বে গদ্যে।
অতীতে কবিতা যেমন ঘটনা-
আলোড়িত আবেগের বাহন
হয়েছে, তেমনি (এখন)
কবিতাকে লিখতে হবে কী ক’
রে ফুটিয়ে তোলা যায়
ভাবোৎসারিত আবেগ ; আর
তা’
করতে যেয়ে কবিতাকে সেই
কবিতাই থাকতে হ’বে যার
রয়েছে প্রৌঢ়
সাংগীতিকতা, উপমা-
অলংকার আর নিষ্কম্প্র মূল্যবোধ।
আর এই সমস্যাতেই এ যুগের
কবিতা আক্রান্ত্র, এর অস্তিত্ব
বিপন্ন ; এবং অবাক হওয়ার কিছু
নেই যে ইয়েটস সাহেব সেই
ভারতীয় কবির
রচনাকে সানন্দে সম্ভাষণ
জানাবেন যিনি অনায়াসে ঐ
সমস্যাটির সমাধান করেছেন
বলে মনে হয়, যেভাবে হাজার
বছর
আগে চীনা চিত্রকলা রাহুমুক্ত
হয়েছিল।”
এথেমিয়াম পত্রিকায়
লেখা হয়েছিল, “তাঁর
(রবীন্দ্রনাথের) কবিতামালায়
এমন এক স্নিগ্ধ
প্রশান্তি রয়েছে যার
শিক্ষা পশ্চিমের অশান্ত-চিত্ত
মানুষের বড় দরকার।”
১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে এই গ্রন্থের
জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল
পুরস্কার অর্জন করেন। ইংরেজ
লেখক এবং রয়্যাল সোসাইটির
সদস্য স্টার্জ মুর নোবেল
পুরস্কারের জন্য
রবীন্দ্রনাথকে মনোনয়ন
দিয়েছিলেন। এই মনোনয়ন
সুইডিশ একাডেমীকে বিস্মিত
করেছিল। তবে একাডেমীর
সদস্য পার হলস্টর্ম রবীন্দ্রনাথের
ব্যাপারে উৎসাহী ছিলেন।
রবীন্দ্রনাথের প্রধান
প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন
ফরাসি লেখক এমিল ফগ।
তবে আরেকজন একাডেমী সদস্য
ভার্নার লন হেইডেনস্টাম
রবীন্দ্রনাথের
পক্ষে প্রশস্তিপূর্ণ এমন
জোরালো ও লিখিত বক্তব্য
দেন যাতে সকল সংশয়ের
অবসান হয়
এবং রবীন্দ্রনাথকে নোবেল
পুরস্কার দেয়ার সিদ্ধান্ত
নেয়া হয়। ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দের ১০
নভেম্বর বুধবার
সাহিত্যে নোবেল
ঘোষণা করা হয়। পর দিন
খবরটি ইংল্যাণ্ডের বিভিন্ন
পত্র-পত্রিকায় মুদ্রিত হয় ; কিন্তু
তা বিলম্বে কলকাতায়
পৌঁছে। ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায়
তারবার্তার মাধ্যমে খবর
আসে যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত
করা হয়েছে।
গীতাঞ্জলি (১৯১২) সহ সেই সময়
সামান্য যে কিছু রবীন্দ্ররচনার
অনুবাদ পাশ্চাত্য পাঠক
মহলে পরিচিতি লাভ
করেছিল, পুরস্কারের
ঘোষণাপত্রে সেসবের
ভূয়সী প্রশংসা করে সুইডিশ
আকাদেমি।
জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল
পুরস্কার অর্জন করেন। ইংরেজ
লেখক এবং রয়্যাল সোসাইটির
সদস্য স্টার্জ মুর নোবেল
পুরস্কারের জন্য
রবীন্দ্রনাথকে মনোনয়ন
দিয়েছিলেন। এই মনোনয়ন
সুইডিশ একাডেমীকে বিস্মিত
করেছিল। তবে একাডেমীর
সদস্য পার হলস্টর্ম রবীন্দ্রনাথের
ব্যাপারে উৎসাহী ছিলেন।
রবীন্দ্রনাথের প্রধান
প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন
ফরাসি লেখক এমিল ফগ।
তবে আরেকজন একাডেমী সদস্য
ভার্নার লন হেইডেনস্টাম
রবীন্দ্রনাথের
পক্ষে প্রশস্তিপূর্ণ এমন
জোরালো ও লিখিত বক্তব্য
দেন যাতে সকল সংশয়ের
অবসান হয়
এবং রবীন্দ্রনাথকে নোবেল
পুরস্কার দেয়ার সিদ্ধান্ত
নেয়া হয়। ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দের ১০
নভেম্বর বুধবার
সাহিত্যে নোবেল
ঘোষণা করা হয়। পর দিন
খবরটি ইংল্যাণ্ডের বিভিন্ন
পত্র-পত্রিকায় মুদ্রিত হয় ; কিন্তু
তা বিলম্বে কলকাতায়
পৌঁছে। ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায়
তারবার্তার মাধ্যমে খবর
আসে যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত
করা হয়েছে।
গীতাঞ্জলি (১৯১২) সহ সেই সময়
সামান্য যে কিছু রবীন্দ্ররচনার
অনুবাদ পাশ্চাত্য পাঠক
মহলে পরিচিতি লাভ
করেছিল, পুরস্কারের
ঘোষণাপত্রে সেসবের
ভূয়সী প্রশংসা করে সুইডিশ
আকাদেমি।
গীতাঞ্জলি সূূূচি | ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
| ||||
|